Rail Accident

ঝাড়খণ্ডে বেলাইন হাওড়া থেকে মুম্বইগামী ট্রেনের ১৮টি কামরা, মৃত ২, আহত ২০, শোকপ্রকাশ মমতার

কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। রেলের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই একটি মালগাড়িও বেলাইন হয়েছে। তবে দু’টি দুর্ঘটনার মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৪
Mumbai bound Howrah CSMT Express derailed in Jharkhand, several injured dgtl

লাইনচ্যুত হাওড়া থেকে মুম্বইগামী এক্সপ্রেস। ছবি: এক্স।

মঙ্গলবার ভোরে ফের রেল দুর্ঘটনা। ভোর পৌনে চারটে নাগাদ ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের কাছে দুর্ঘটনার কবলে হাওড়া থেকে মুম্বইগামী হাওড়া-সিএসএমটি এক্সপ্রেস। প্রাথমিক ভাবে খবর, দুর্ঘটনার জেরে বেলাইন হয়ে গিয়েছে ট্রেনের অন্তত ১৮টি কামরা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনের, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন যাত্রী। আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেলের তরফে ইতিমধ্যেই উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ।

Advertisement

যে ১৮টি কামরা বেলাইন হয়েছে, তার মধ্যে ১৬টিই যাত্রিবাহী কামরা। বাকি দু’টির মধ্যে একটি ট্রেনের বিদ্যুৎ সংযোগের কামরা এবং অন্যটি প্যান্ট্রি কার। দুর্ঘটনাস্থল থেকে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে চক্রধরপুরে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য। সিংভূম পশ্চিমের ডিসিকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, ১৮টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে এবং দুর্ঘটনার জেরে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে ও ২০ জন আহত হয়েছেন।

কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে রেলের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, যে জায়গায় মুম্বইগামী ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, তার কাছেই একটি মালগাড়িও বেলাইন হয়েছে। তবে এই দু’টি দুর্ঘটনার মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি। কেন দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধান শুরু করেছে রেল।

ঝাড়খণ্ডে রেল দুর্ঘটনার পর ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একাধিক স্টেশনে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। হাওড়া স্টেশনের জন্য ৯৪৩৩৩৫৭৯২০ ও ০৩৩২৬৩৮২২১৭, টাটানগর স্টেশনের জন্য ০৬৫৭২২৯০৩২৪, চক্রধরপুর স্টেশনের জন্য ০৬৫৮৭ ২৩৮০৭২, রৌরকেলা স্টেশনের জন্য ০৬৬১২৫০১০৭২ ও ০৩৩২৬৩৮২২১৭ এবং রাঁচি স্টেশনের জন্য ০৬৫১২৭৮৭১১৫ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।

ঘন ঘন ট্রেন দুর্ঘটনায় যাত্রী সুরক্ষায় রেলের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে শোকপ্রকাশ করেছেন তিনি। দুর্ঘটনায় যাঁরা প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “আর কত দিন আমাদের এ সব সহ্য করতে হবে? কেন্দ্রীয় সরকারের এই অকর্মণ্যতার কি কোনও শেষ নেই?”

প্রসঙ্গত, গত বছর ওড়িশার বাহানগায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ছবি এখনও আবছা হয়নি। সেখানেও একটি মালগাড়ির উপর উঠে গিয়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কামরা। তার পর চলতি বছরে নিউ জলপাইগুড়ির কাছে কাঞ্চনডঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। এর পর অতি সম্প্রতি ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস উত্তরপ্রদেশে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। এ বার ফের রেল দুর্ঘটনা ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের কাছে।

দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওমপ্রকাশ চরণ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোর ৩টে ৪৩মিনিটে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল ট্রেনটি। উদ্ধারকাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি। এ ছাড়া আরও পাঁচ জন যাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক। তাঁদের চক্রধরপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৮০ শতাংশ যাত্রীকে বাসে চক্রধরপুর স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ যাত্রীকে একটি বিশেষ ট্রেনে চক্রধরপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ চক্রধরপুর থেকে একটি বিশেষ ট্রেন যাত্রীদের নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেবে।


আরও পড়ুন
Advertisement