Manipur Violence

‘উদ্দেশ্য ভাল নয়’, মণিপুর হিংসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করলেন বৈঠকে না থাকা বিজেপি বিধায়কেরা

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর ‘উদ্দেশ্য’ নিয়েই প্রশ্ন তুললেন সে রাজ্যের বিজেপি বিধায়কদের একাংশ। কেউ কেউ এক ধাপ এগিয়ে মণিপুরে অচলাবস্থা চলার জন্য বীরেন সিংহকেই দায়ী করছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫৬
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। —ফাইল চিত্র।

নিজের দলের বিধায়কদেরই তোপের মুখে পড়লেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। বীরেনের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিজেপি বিধায়কদের একাংশ। এমনকি কেউ কেউ এক ধাপ এগিয়ে মণিপুরে অচলাবস্থা চলার জন্য সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করলেন।

Advertisement

সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে গরহাজির থাকা বিধায়কদের এক জন ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে বলেন, “উনি (বীরেন) দাবি করেছিলেন যে, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছেন। কিন্তু এই বৈঠকে তো উনি যৌথ বাহিনী, রাজ্য পুলিশের ডিজি, নিরাপত্তা উপদেষ্টা, মুখ্যসচিব, সিআরপিএফ এবং আসাম রাইফেলের আইজিকে ডাকতে পারতেন। বিধায়কদের বৈঠকে ডেকে ওঁর লক্ষ্যপূরণ হবে কি?” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “বৈঠকে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে কোনও প্রস্তাবই পাশ করানো হয়নি।” বৈঠকে যে বিষয়গুলি নিয়ে প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে, সেগুলির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছেন ওই বিজেপি বিধায়ক।

প্রসঙ্গত, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে বৈঠক ডেকেছিলেন বীরেন। সেই বৈঠকে বিজেপি-সহ এনডিএ-র অন্য শরিক দলগুলির ২৭ জন বিধায়ক উপস্থিত থাকলেও গরহাজির ছিলেন ১১ জন। অনুপস্থিত বিধায়কদের মধ্যে ছ’জন গরহাজিরার কারণ হিসাবে শারীরিক অসুস্থতার কথা জানালেও অন্য পাঁচ জন কোনও কারণ দর্শাননি। বৈঠকে উপস্থিত থাকা এনডিএ-র প্রায় সব বিধায়ক কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার আর্জি জানান। এর পাশাপাশি মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকার ছ’টি থানায় সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন ‘আফস্পা’ প্রত্যাহারের আর্জি জানান ওই বিধায়কেরা। প্রস্তাব আকারে নিজেদের এই দুই দাবি তুলে ধরার পর এনডিএ-র বিধায়কেরা হুঁশিয়ারির সুরে জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেন্দ্র তাঁদের কথা মেনে না নিলে জনগণের পরামর্শ নিয়ে তাঁরা ভবিষ্যতের কর্মপন্থা স্থির করবেন।

বৈঠকে গরহাজির আর এক বিজেপি বিধায়ক আরও চাঁছাছোলা ভাষায় মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন। বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য ভাল নয়। আর সেই কারণেই এই সঙ্কট এখনও চলছে। এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হল যুযুধান দুই পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসানো।” কেন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই বিজেপি বিধায়ক। তাঁর দাবি, এই ধরনের বৈঠক আগেই হয়েছে। সইসাবুদের পর হাসিমুখে ছবি তোলা হয়েছে। সেই ছবি দিল্লি গিয়েছে। কিন্তু বৈঠকে বিধায়কদের কাছে কখনও কোনও পরামর্শ বা মতামত চাওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন।

সম্প্রতি মণিপুরের জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। পরে দুই দফায় ছ’জনের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁদের দেহ শনাক্ত করা যায়নি। তবে অনেকেরই অভিযোগ, অপহৃত ছ’জনের দেহ নদীতে ভেসে এসেছে। দেহ উদ্ধারের পর থেকে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় মণিপুরে। বিচার চেয়ে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়ে ইম্ফলের রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়।

আরও পড়ুন
Advertisement