One Nation One Election Committee

এক দেশ এক ভোট: আট সদস্যের কমিটিতে অমিত শাহের সঙ্গে অধীর চৌধুরী, আর কাকে কাকে নিল কেন্দ্র?

আগেই জানা গিয়েছিল, কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ ছাড়া, আরও সাত জন সদস্যকে নিয়ে কমিটি গঠিত হচ্ছে। থাকছেন অমিত শাহ, অধীর চৌধুরী।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:০৩
(বাঁ দিক থেকে) অমিত শাহ, রামনাথ কোবিন্দ এবং অধীর চৌধুরী।

(বাঁ দিক থেকে) অমিত শাহ, রামনাথ কোবিন্দ এবং অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।

‘এক দেশ এক ভোট’ (ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন) নীতি রূপায়ণের কমিটিতে কারা কারা থাকছেন, শনিবার সেই নামের তালিকা প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় সরকার। আগেই জানা গিয়েছিল, কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ ছাড়া, আরও সাত জন সদস্যকে নিয়ে কমিটি গঠিত হচ্ছে। এই কমিটিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লোকসভার নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী ছাড়াও থাকবেন গুলাম নবি আজাদ, এনকে সিংহ, সুভাষ সি কাশ্যপ, হরিশ সালবে এবং সঞ্জয় কোঠারী। অর্থাৎ, কোবিন্দকে নিয়ে মোট আট জন সদস্য থাকছেন ‘এক দেশ এক ভোট’ রূপায়ণ কমিটিতে।

Advertisement

গুলাম নবি আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২২ সালে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তিনি ডেমোক্রেটিভ প্রগ্রেসিভ আজাদ পার্টি গঠন করেন। এনকে সিংহ (নন্দ কিশোর সিংহ) ২০১৪ সাল থেকে বিজেপিতে। এর আগে তিনি বিহার থেকে রাজ্যসভায় জনতা দলের সাংসদ ছিলেন। সুভাষ সি কাশ্যপ লোকসভা সচিবালয়ের প্রাক্তন সদস্য। হরিশ সালবে দেশের প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল এবং সঞ্জয় কোঠারী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার।

কমিটির নেতা হিসাবে কোবিন্দের নাম শুক্রবারেই ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। শনিবার কমিটির বাকি সদস্যদের নামও প্রকাশ্যে এল। লোকসভা ভোটের আগে ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর করার তৎপরতা শুরু করেছে মোদী সরকার। গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথা ঘোষণা করেছেন। সেখানে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পাশাপাশি ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত বিল পাশ করানো হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে। সেই বিশেষ অধিবেশনেই কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটি রিপোর্ট পেশ করতে পারে।

‘এক দেশ এক ভোট’ নীতির কার্যকর করার মাধ্যমে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই সব রাজ্যের বিধানসভা ভোটও সেরে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র। এ বিষয়ে মোদী সরকারের যুক্তি হল, এতে নির্বাচনের খরচ কমবে। একটি ভোটার তালিকাতেই দু’টি নির্বাচন হওয়ায় সরকারি কর্মীদের তালিকা তৈরির কাজের চাপ কমবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না। নীতি আয়োগ, আইন কমিশন, নির্বাচন কমিশনও এই ভাবনাকে নীতিগত সমর্থন জানিয়েছে বলে কেন্দ্রের দাবি। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরেই মোদী ‘এক দেশ এক ভোট’ তত্ত্ব প্রকাশ্যে এনেছিলেন।

বিরোধী দলগুলি অবশ্য প্রথম থেকেই ‘এক দেশ এক ভোট’ পদ্ধতির সমালোচনা করে আসছে। মুম্বইয়ে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী নেতারা। তাঁদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতন্ত্রিক ভাবনার পরিপন্থী। বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির আশঙ্কা, ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকর হলে লোকসভার ‘ঢেউয়ে’ বিধানসভাগুলি ‘ভেসে যাবে’। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটুকু বৈচিত্র্যের সম্ভাবনা রয়েছে, বিজেপির আগ্রাসী প্রচারের মুখে তা ভেঙে পড়বে। ‘এক ভোট’ ব্যবস্থা চালুর পরে কেন্দ্রে বা কোনও রাজ্যে পাঁচ বছরের আগেই নির্বাচিত সরকার পড়ে গেলে কী হবে, প্রশ্ন রয়েছে তা নিয়েও।

‘এক দেশ এক ভোট’ পদ্ধতি করতে সংবিধানের বেশ কিছু অনুচ্ছেদ বদলের প্রয়োজন হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর। ৮৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সংসদের দুই কক্ষের মেয়াদের কথা বলা হয়েছে। ৮৫ নম্বর অনুচ্ছেদে লোকসভা ভেঙে দেওয়ার নিয়ম নথিবদ্ধ রয়েছে। ১৭২ নম্বরে রয়েছে রাজ্য বিধানসভাগুলির মেয়াদের কথা। ১৭৪ নম্বর অনুচ্ছেদে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার নিয়ম নথিবদ্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ৩৫৬ নম্বর ধারায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি সংক্রান্ত বিধি এবং ১৯৫১ সালের ভারতীয় জনপ্রতিনিধিত্ব আইনও কিছু সংশোধন করার প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement