আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আমেরিকায় কোনও অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী থাকলে, তাঁদের দেশে ফেরাতে কোনও আপত্তি নেই। দিল্লির অবস্থান শুক্রবার আবারও স্পষ্ট করে দিল বিদেশ মন্ত্রক। শুধু আমেরিকা নয়, বিশ্বের যে কোনও দেশের ক্ষেত্রেই অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে একই অবস্থান নরেন্দ্র মোদী সরকারের। তবে এ ক্ষেত্রে শর্তও বুঝিয়ে দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে যাঁদের পাকড়াও করা হচ্ছে, তাঁদের বিষয়ে তথ্য এবং প্রয়োজনীয় নথি ভারতকে দিতে হবে। যাতে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন অবৈধ অভিবাসী ভারতীয় কি না, তা যাচাই করতে পারে দিল্লি।
ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারত সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আমেরিকা সফরকালে ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাস থেকেও অবৈধ অভিবাসন প্রসঙ্গে দিল্লির নীতিগত অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনিও জানিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসন দিল্লি কখনওই সমর্থন করে না। শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল আবারও তা স্পষ্ট করেছেন।
জয়সওয়াল জানান, ভারত সবসময় অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে। কারণ এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের সংগঠিত অপরাধ জড়িত থাকে। তাঁর কথায়, “শুধুমাত্র আমেরিকা বলে নয়, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে যদি কোনও ভারতীয় অবৈধ ভাবে বাস করেন, আমরা তাঁদের ফিরিয়ে নেব। তবে আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টের নথিপত্র ভাগ করে নিতে হবে, যাতে আমরা যাচাই করতে পারি তিনি সত্যিই ভারতীয় কি না। যদি তা হয়, আমরা তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।”
আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন। ধরপাকড়ও শুরু করেছে ট্রাম্পের প্রশাসন। ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ৫৩৮ জন অবৈধ অভিবাসীকে। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের তরফে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রেসসচিব ক্যারোলিন লেভিট। ‘ব্লুমবার্গ’-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকায় বসবাসকারী প্রায় ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমেরিকায় কত জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়েছে সে বিষয়ে দিল্লির তরফে এখনও স্পষ্ট কোনও সংখ্যা জানানো হয়নি। তবে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সম্প্রতি জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে দু’দেশই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে।
পরে জয়শঙ্করও ওয়াশিংটন থেকে জানান, অবৈধ যাতায়াত এবং অভিবাসনের তীব্র বিরোধিতা করছে দিল্লি। কারণ, যখনই কোনও একটি অবৈধ ঘটনা ঘটে, তার সঙ্গে আরও অনেক অবৈধ কার্যকলাপ জুড়ে যায়। তা দেশের সুনামের দিক থেকে কখনওই ভাল নয়। তবে কোনও অবৈধ অভিবাসীকে ফেরানোর ক্ষেত্রে তিনি ভারতীয় কি না, তা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন বলেও জানান জয়শঙ্কর।