Maratha Quota Movement

মরাঠা সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে উত্তাল মহারাষ্ট্র, ইস্তফা দুই সাংসদ, তিন বিধায়কের

আগের জোট সরকারের আমলে মরাঠা সম্প্রদায়ের জন্য চাকরিতে এবং শিক্ষায় ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তাতে সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্র মেলেনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মুম্বই শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৪৩
মরাঠাদের জন্য সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন মহারাষ্ট্রে।

মরাঠাদের জন্য সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন মহারাষ্ট্রে। ছবি: পিটিআই।

সরকারি চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে মরাঠা জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল মহারাষ্ট্র। হামলা হচ্ছে নেতা-মন্ত্রী-বিধায়কদের বাড়িতে। ঘটেছে একাধিক আত্মহত্যার ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে মঙ্গলবার ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন সে রাজ্যের দুই সাংসদ এবং তিন বিধায়ক।

Advertisement

শিবসেনা (শিন্ডে শিবির) সাংসদ হেমন্ত পাতিল (হিঙ্গোলি) এবং হেমন্ত গডসে (নাসিক) মঙ্গলবার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন। ইস্তফার কথা জানিয়েছেন, শিন্ডেসেনার বিধায়ক রমেশ বরনারের পাশাপাশি, কংগ্রেস বিধায়ক সুরেশ ওয়ারপুরকর, বিজেপির লক্ষ্মণ পওয়ারও। রাজ্যের একাধিক জায়গায় মরাঠা সংরক্ষণ আন্দোলন ঘিরে হিংসার ঘটনাও ঘটেছে। অবরোধের জেরে বিপর্যস্ত হয়েছে সড়ক এবং রেল পরিবহণ ব্যবস্থা।

এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মরাঠাদের একাংশকে অনগ্রসর ‘কুনবি’ সম্প্রদায়ভুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করে সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়ার জন্য সক্রিয় হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিন্ডেসেনা-বিজেপি-এনসিপি (অজিত) জোট সরকার। মরাঠাদের ‘কুনবি’ জাতি শংসাপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। কিন্তু সেই বৈঠকে দুই উপমুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ণবীস এবং এনসিপি (অজিত)-র অজিত পওয়ার হাজির ছিলেন না। যা নিয়ে কটাক্ষ করে শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘‘এই সরকারের মরাঠা সংরক্ষণ চালু করার ক্ষমতা নেই।’’

মহারাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় মরাঠাদের জন্য সংরক্ষণের দাবি তুলে গত কয়েক বছর ধরেই মিটিং-মিছিল চলছে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে। সম্প্রতি আন্দোলনকারীরা শুরু করেছেন অনশন কর্মসূচি। এনসিপি (অজিত) গোষ্ঠীর নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী প্রকাশ সোলাঙ্কি গত সপ্তাহে সেই আন্দোলনের নেতা মনোজ জারঙ্গে পাটিলের অনশন কর্মসূচিকে কটাক্ষ করায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়। সোমবার বীড় জেলায় প্রকাশের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। হামলা হয় বীড় জেলার শরদ পওয়ারপন্থী এনসিপি বিধায়ক সন্দীর কসিরসাগরের দফতরেও।

প্রসঙ্গত, আইন অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশের বেশি আসনকে জাতপাত ভিত্তিক সংরক্ষণের আওতায় আনা যায় না। জাত এবং বর্ণের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। তাই মরাঠাদের জন্য নতুন করে বর্ণভিত্তিক সংরক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। এর আগে বিজেপি-শিবসেনা জোটের সরকারের আমলে মরাঠা সম্প্রদায়ের জন্য চাকরিতে এবং শিক্ষায় ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছিল।

মরাঠাদের অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি হিসেবে ঘোষণা করে ওই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাতে বম্বে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি মেলেনি। আন্দোলনের নেতা মনোজ বলেন, ‘‘আমরা কোনও আংশিক সংরক্ষণের প্রস্তাব মানব না। সমগ্র মরাঠা জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথক ভাবে পূর্ণাঙ্গ সংরক্ষণ চাই।’’ বিরোধীদের তরফে মরাঠা সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনার জন্য অবিলম্বে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি জানানো হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন