নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
গত লোকসভা ভোটের পরে ছ’মাস অতিক্রান্ত হয়েছে নতুন চেহারার এনডিএ সরকারের। এই প্রথম কোনও সংসদ শুরুর আগে সামান্য হলেও বেসুরে বাজতে শোনা গেল সরকারে বিজেপির শরিক দলগুলিকে। সূত্রের খবর, আজ সর্বদলীয় বৈঠকে ভোটের মুখে দাঁড়ানো বিহারের দল তথা এনডিএ-র অন্যতম শরিক জেডি(ইউ)-র পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে, ‘এক দেশ এক ভোট’ নিয়ে ধীরে চলা হোক। এই নিয়ে পর্যালোচনার জন্য গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটিকে আরও বেশি সময় দিতে উপস্থিত সরকার পক্ষের রাজনাথ সিংহের কাছে আবেদন জানিয়েছেন জেডি(ইউ) প্রতিনিধি সাংসদ। পাশাপাশি জেডি(ইউ) এবং টিডিপি উভয় শরিকই অধিবেশনে বলার জন্য অধিক সময় দাবি করেছে। অর্থাৎ প্রধান দল বিজেপি যে তাদের সাংসদদের যথেষ্ট সময় দিচ্ছে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছে শরিকরা। একই দাবি জানিয়েছেন আর এক শরিক দলের নেতা এলজেপি-র চিরাগ পাসোয়ান। পাশাপাশি কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ অন্য বিরোধী দলগুলিও মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বিষয় এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের অমর্যাদা নিয়ে সরব হয়েছে।
এক সঙ্গে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট করার লক্ষ্যে গত ১৭ ডিসেম্বর লোকসভায় দু’টি বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল। সেগুলির খসড়া নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে গঠিত সংসদের যৌথ কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকটি হবে কাল। তার আগে আজ নীতীশ কুমারের দলের এ হেন বার্তা, এনডিএ-র মধ্যে কিছুটা ভিন্ন স্বরের জন্ম দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পাশাপাশি আজ তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে ৮টি বিষয়ের উল্লেখ করেন। তার মধ্যে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন সংসদীয় গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার উপরে নেমে আসা আঘাতগুলিকে। বৈঠকের পরে সুদীপ বলেন, “আমি জানিয়েছি যে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো জ্বলন্ত সমস্যাগুলি সরকার কখনই তুলবে না।এই দাবি তুললেই তারা বলে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনার সময়ে বিষয়গুলির উল্লেখ করতে। কিন্তু এগুলি নিয়ে আলাদা করে আলোচনা প্রয়োজন। আজ বিশেষ করে বলেছি, সাধারণ মধ্যবিত্তকে আয়করে ছাড় দিতেই হবে।”
সুদীপের পাশাপাশি ডিএমকে, আরজেডি, সিপিএম, সিপিআইয়ের নেতারাও ইউজিসি-র কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও উপাচার্য নিয়োগে বড় পরিবর্তন আনার বিষয়টির বিরোধিতা করেছে। পাশাপাশি ‘সংসদীয় গণতন্ত্রের ঐতিহ্যের অবনমন’ নিয়েও বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ প্রায় সব দল। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেছেন, “৯০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তৈরি হয়। তখন থেকে একটি নিয়ম চলেছে, একটি কমিটিতে এক জন সাংসদ থাকবেন। কিন্তু এখন ২৬ জন বিজেপি সাংসদ রয়েছেন যাঁরা দু’টি করে স্থায়ী কমিটির সদস্য।”