মণিপুরে অস্ত্র উদ্ধারে নিরাপত্তাবাহিনী। ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানালেন বিজেপি বিধায়ক। মণিপুরের জনগণের কাছে এই আর্জি জানিয়েছেন তিনি। অস্ত্র ফেরানোর জন্য তিনি নিজের বাড়িতে একটি বাক্সও বসিয়েছেন। বলা হয়েছে, ওই বাক্সে যাঁরা অস্ত্র ফিরিয়ে দিয়ে যাবেন, তাঁদের নাম এবং পরিচয় গোপন রাখা হবে। কোথা থেকে কী ভাবে অস্ত্র তাঁদের হাতে এল, তা নিয়েও কোনও প্রশ্ন করা হবে না।
ইম্ফল পূর্বের বিধায়ক এল সুসিন্দ্র মেইতেই। নিজের বাড়িতে এই বাক্স বসিয়ে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, নির্দ্বিধায় সকলে অস্ত্র জমা দিয়ে যেতে পারবেন। একটি বড় পোস্টার তিনি বাড়িতে লাগিয়েছেন। ইংরাজি এবং মেইতেই ভাষায় সেখানে জনতার কাছে ছিনতাই করা অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল মণিপুরে। রাজ্যের হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আদি বাসিন্দা মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ হিংসার আকার নেয়। সেই সংঘর্ষের আবহে মে মাসের প্রথম দিকে রাজ্যের নানা প্রান্তের থানা থেকে অস্ত্রশস্ত্র ছিনতাই করা হয়েছিল। বহু অস্ত্র লুট হয়ে গিয়েছিল। তার মাধ্যমেই মণিপুরের হিংসা মাত্রা ছাড়ায়।
তার পর থেকেই মণিপুরের প্রশাসন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ এমনকি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বাসিন্দাদের কাছে অস্ত্র-সহ আত্মসমর্পণের আর্জি জানিয়েছিলেন। এ বার বিজেপি বিধায়ককে অস্ত্র ফেরানোর জন্য বাক্স বসাতে দেখা গেল।
বিধায়কের বাড়িতে বসানো বাক্সে ইতিমধ্যে বেশ কিছু অস্ত্র জমা পড়েছে বলে খবর সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে। জমা পড়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে কিছু স্বয়ংক্রিয় রাইফেল এবং গোলাবারুদও।
মণিপুরের হিংসায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে ১০০ জনের। গুরুতর আহতের সংখ্যা প্রায় ৫০০। গোষ্ঠীহিংসার জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। রাজ্যের পুলিশ, সেনা এবং আধাসেনা এই মুহূর্তে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। শুক্রবার তারা যৌথ অভিযান চালিয়ে ৩৫টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। আরও অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।