অভিযুক্ত যুবক সুনীল কুমার। ছবি: সংগৃহীত।
কখনও আয়কর দফতরের আধিকারিক, কখনও আইপিএস অফিসার, কখনও আবার নিজেকে সরকারি কর্মীর পরিচয়ে পাত্রীপক্ষের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতেন। নিজেকে আইএএস, আইপিএস প্রমাণ করার জন্য কখনও ইউপিএসি দফতরের বাইরে দাঁড়িয়ে নিজের ছবি তুলতেন, কখনও আবার ভাড়া করা পুলিশের পোশাকে ছবি তুলতেন। আর সেই ছবি সাজমাধ্যমে শেয়ার করতেন।
পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপন দেখে পাত্রীপক্ষের সঙ্গে যোগযোগ করতেন। তার পর নিজেকে কারও কাছে পুলিশ কনস্টেবল, কারও কাছে সরকারি কর্মী হিসাবে পরিচয় দিতেন। কিন্তু সেই পরিচয়ে যখন কোনও সম্বন্ধ পাকাপাকি হচ্ছিল না, অন্য কৌশল নিলেন রাজস্থানের জয়পুরের বাসিন্দা সুনীল কুমার। কর্মসূত্রে তিনি উত্তরাখণ্ডের মুসৌরিতে থাকেন। সম্বন্ধ পাকাপাকি না হওয়ায় তাই নিজেকে আরও উচ্চপদস্থ অফিসার হিসাবে পরিচয় দেওয়ার কৌশল নেন।
পুলিশ কনস্টেবল বা কোনও সাধারণ সরকারি কর্মী নয়, এ বার পাত্রীপক্ষের কারও কাছে নিজেকে আইএএস, কারও কাছে আবার আইপিএস, কখনও আয়কর দফতরের আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। পাত্রীপক্ষ যাতে তাঁর কথা বিশ্বাস করেন, তার জন্য আবার ইউপিএসসির অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন। মুসৌরিতে আইপিএস প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে ছবি তোলেন। এমনকি, পুলিশের পোশাকও ভাড়া করেন। এ ভাবেই সুনীলের প্রতারণা ফাঁদে পড়ে এক পাত্রীপক্ষ। নিজেকে তাঁদের কাছে আইপিএস অফিসার হিসাবে পরিচয় দেন সুনীল। তাঁদের বিয়ের কথাও পাকা হয়ে যায়। বিয়েও করেন সুনীল। কিন্তু সুনীলের এই প্রতারণা প্রকাশ্যে আসে বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই।
সুনীলের শ্যালক মুসৌরিতে ঘুরতে আসেন। দিদির বাড়িতে এসে ওঠেন। ওই এলাকারই কয়েক জন যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় সুনীলের শ্যালকের। তাঁদের কাছে নিজের জামাইবাবুর প্রশংসা করতেই আসল সত্য প্রকাশ্যে আসে। ওই যুবকেরা সুনীলের শ্যালককে জানান, তিনি কোনও আইপিএস নন। মুসৌরিতে একটি মুদি দোকানের কর্মচারী। আর তার পরই হুলস্থুল পড়ে যায়। সুনীলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করে তাঁর স্ত্রীর পরিবার। তার পরই গ্রেফতার করা হয় সুনীলকে। বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।