বালেশ্বরে রেল দুর্ঘটনায় সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রেলের কাজে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বলে রেলমন্ত্রীর সামনেই অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘মনে হয় রেলের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। আরও যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।’’ বালেশ্বরে পৌঁছনোর পর রেলমন্ত্রী অশ্বিনীর সঙ্গে দেখা হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতার। কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তা রেলমন্ত্রীর কাছ থেকে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তখন রেলমন্ত্রী বৈষ্ণব জানান যে, ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও তার ঘণ্টা খানেক আগেই রেলের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, দুর্ঘটনায় তখনও পর্যন্ত ২৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রেল দুর্ঘটনায় বাংলায় মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। গুরুতর আহতদের ১ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানালেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলার মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রাজ্যের যাঁরা আহত হয়েছেন, প্রয়োজনে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের চিকিৎসা করাব।’’
বালেশ্বরে ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘুরে দেখেছেন দুর্ঘটনাস্থল। কথা বলেছেন রেলমন্ত্রীর সঙ্গে। বালেশ্বর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘সাক্ষাৎ হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।’’
বালেশ্বরে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কিছু একটা নিশ্চয়ই হয়েছে। সঠিক তদন্ত করা হোক।’’
বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার কপ্টারে করে ওড়িশার বালেশ্বরে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘুরে দেখবেন দুর্ঘটনাস্থল।
কী ভাবে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল। দুর্ঘটনা নিয়ে সরগরম রাজনীতির ময়দানও। দুর্ঘটনায় রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র সাকেত গোখলে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশন নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
শুক্রবার রাতে মমতা টুইটে লিখেছিলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় বালেশ্বরের কাছে একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাত্রিবাহী শালিমার-করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। অনেকে গুরুতর জখম হয়েছেন। আমাদের রাজ্যের যাত্রীদের জন্য ওড়িশা সরকার এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রেখে চলছি। জরুরি ভিত্তিতে কন্ট্রোলরুমও চালু করা হয়েছে।’’
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় ওড়িশার বালেশ্বরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ হাওড়ার অদূরে শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। প্রায় ৪ ঘণ্টা পরে বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ২৩ কামরার ট্রেনটি। রেল দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শনিবার রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ২৬১। আহত হয়েছেন প্রায় ৬৫০ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদেরও আশঙ্কা, উদ্ধারকাজ যত এগোবে, নিহত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়বে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনে অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।