মোহনবাগান সুপার জায়ান্টে খেলার সময় আর্মান্দো সাদিকু। —ফাইল চিত্র।
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হাত ধরে ভারতে এসেছিলেন আলবেনিয়ার আর্মান্দো সাদিকু। ৬ ফুট ১ ইঞ্চির সেই দীর্ঘকায় স্ট্রাইকার একটাই মরসুম খেলেছিলেন কলকাতার ক্লাবে। তাতেই দু’টি ট্রফি জয়। ডুরান্ড কাপ এবং আইএসএল লিগশিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মোহনবাগান। স্ট্রাইকার হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মাত্র ৩০ মিনিটে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কেন?
মোহনবাগান ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মাত্র আধ ঘণ্টায়। তবু সেটা সহজ কাজ ছিল না বলে স্বীকার করেছেন সাদিকু। তিনি বলেন, “আমি দল ছাড়তে চাইনি। বরং ক্লাব বলেছিল যে, তারা এক জন নতুন স্ট্রাইকারকে সই করাতে চায়। তাই আমার দলে জায়গা পাওয়া কঠিন হবে। সেই সময় এফসি গোয়ার থেকে প্রস্তাব আসে। আমি গোয়ার কোচ মানোলো মার্কেজ়ের সঙ্গে কথা বলি। লা পালমায় থাকার সময় থেকেই আমরা একে অপরকে চিনতাম। তা ছাড়া, মোহনবাগান এসজি বনাম এফসি গোয়ার ম্যাচের সময় কয়েক বার আমাদের মধ্যে কথা হয়েছিল। মানোলো আমাকে বলেছিলেন, ক্লাব কী ভাবে কাজ করে। কোচের সঙ্গে ফোনে কথা বলার ৩০ মিনিটের মধ্যে আমি সরাসরি রাজি হয়ে যাই। আমি এখানকার কিছু বন্ধুর সঙ্গেও কথা বলেছিলাম। মোহনবাগানে আমার ভাল বন্ধু ছিল হুগো বুমোস। ও আমাকে এফসি গোয়া দল এবং গোয়া রাজ্য সম্পর্কে সুন্দর কিছু কথা বলে। বুঝতে পারি, আমি তো এ রকমই চাই।”
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর কলকাতায় এসে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলেন সাদিকু। তিনি বলেন, “কলকাতায় জীবন একটু কঠিন, তা-ও সেখানে সব কিছু ঠিকঠাক ছিল। গোয়ায় সব কিছু আলাদা। কলকাতার তুলনায় এখানে নিজেকে অনেক বেশি মুক্ত মনে হয়। কোনও চাপ নেই, এবং দলে সকলে সাহায্য করার চেষ্টা করে। এখানে আমি ইউরোপীয় পরিবেশ অনুভব করি। তাই মাঠেও নিজেকে অনেকটা চাপমুক্ত ভাবে খেলতে পারি।” ইতিমধ্যেই ৮ গোল করে ফেলেছেন সাদিকু। রয়েছেন সোনার বুটের দৌড়ে।
ভারতে সাদিকুর প্রথম ম্যাচ ছিল ডুরান্ড কাপে কলকাতা ডার্বি। যা তাঁর জীবনের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। সাদিকু বলেন, “আমি ভেবেছিলাম, আমি ওখানে গিয়ে ফাটিয়ে দেব! কিন্তু ভারতে ব্যাপারটা অনেক কঠিন! সে দিন তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মিনিট কুড়ির মধ্যেই আমার মনে হয়, ‘হে ভগবান, আমি এই দেশে কী করছি?’ তবে ধাপে ধাপে উন্নতি করেছি। যখন আন্তোনিয়ো হাবাস মরসুমের দ্বিতীয় পর্বে এলেন, তখন আমি ভাল খেলতে শুরু করি। দলও উন্নতি করে। মরসুম শেষ করি লিগশিল্ড জিতে।”