Mahua Moitra

দিনেদুপুরে উধাও মহুয়ার স্পিকারকে আক্রমণ করে ‘জেলে যেতে পারি’ টুইট, হল কী? নেপথ্যে কী কারণ?

টুইটটি কি মহুয়া নিজেই মুছে দিয়েছেন? দলের তরফে কি তাঁকে টুইটটি মুছে দিতে বলা হয়েছে? নইলে কী ভাবে টুইটটি তাঁর হ্যান্ডল থেকে উধাও হয়ে গেল, ইত্যাদি নানা প্রশ্ন এবং জল্পনা ঘুরছে তৃণমূলের অন্দরে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৮:৫৯
Mahua Moitra’s ‘ready to go to jail’ tweet got deleted

স্পিকারকে সরাসরি আক্রমণ করার জন্য বিজেপি মহুয়ার বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব আনতে পারে। নিজস্ব চিত্র।

বুধবার রাতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে কড়া আক্রমণ করে টুইট করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বৃহস্পতিবার আচমকা তাঁর টুইটার হ্যান্ডল থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে তাঁর সেই টুইটটি! সেটি কি মহুয়া নিজেই মুছে দিয়েছেন? দলের তরফে কি তাঁকে টুইটটি মুছে দিতে বলা হয়েছে? ইত্যাদি নানা প্রশ্ন এবং জল্পনা ঘুরছে তৃণমূলের অন্দরে।

আদানিকাণ্ড এবং রাহুল গান্ধীর মন্তব্য— এই দু’টি বিষয় নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তাল সংসদের দুই কক্ষ। লোকসভা মুলতুবিও করতে হয়েছে স্পিকার ওম বিড়লাকে। বুধবার রাতে সেই স্পিকারকেই নিশানা করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। টুইটে তিনি লেখেন, ‘গত তিন দিন ধরে আমরা দেখতে পাচ্ছি, মাননীয় স্পিকার ওম বিড়লা শুধু বিজেপির মন্ত্রীদেরই সংসদে বলতে দিচ্ছেন। তার পরেই সংসদ মুলতুবি ঘোষণা করে দিচ্ছেন তিনি। বিরোধী কোনও সদস্যকে বলার সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না।’ সেই টুইটেরই শেষে মহুয়া লিখেছিলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র আজ আক্রমণের মুখে। স্পিকার সামনে থেকে তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই টুইটটি করার জন্য যদি আমায় জেলে যেতে হয়, আমি তাতেও রাজি।’

Advertisement

মহুয়া যে ওই টুইটটি করেছেন, বুধবার রাতেই তা প্রকাশ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। শোনা যায়, স্পিকারকে সরাসরি আক্রমণ করার জন্য বিজেপি মহুয়ার বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব আনতে পারে। তৃণমূলের অন্দরেও শুরু হয় নানা জল্পনা। দলীয় সূত্রের খবর, দলের এক প্রবীণ সাংসদ (যাঁর সঙ্গে স্পিকার ওম বিড়লার সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল) তৃণমূলের অন্দরে সরাসরিই বলেন, স্পিকারকে ওই ভাবে আক্রমণ করা অনুচিত হয়েছে। বিশেষত, যে ভাবে তিনি লিখেছেন, ওই টুইটটি করার জন্য তিনি জেলে যেতেও রাজি, তা ‘বাড়াবাড়ি রকমের অসম্মানজনক’। সংসদীয় রাজনীতিতে এমন ব্যবহার প্রত্যাশিত নয়। একটি সূত্রের দাবি, তিনিই টুইটটি মুছে দেওয়ার দাবি তোলেন। তাতে সমর্থন ছিল একাধিক সাংসদেরও। তবে এর আনুষ্ঠানিক কোনও সমর্থন মেলেনি। কিন্তু দেখা যায়, টুইটটি উধাও হয়ে গিয়েছে।

টুইটটি কেন আর দেখা যাচ্ছে না, তা জানতে মহুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি ফোন তোলেননি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব আসেনি। তবে তাঁর ‘টিম’-এর এক সদস্য দাবি করেছেন, আদানি সংক্রান্ত একটি টুইট করতে গিয়ে স্পিকারকে লক্ষ্য করে-করা বুধবার রাতের টুইটটি ‘ডিলিট’ হয়ে গিয়েছে। তার পরে শত চেষ্টাতেও সেটি আর ফিরিয়ে আনা যায়নি। ওই সদস্যের মতে, ‘‘বিষয়টি একেবারেই প্রযুক্তিগত। এর মধ্যে অন্য কিছু নেই।’’

শিল্পপতি গৌতম আদানির গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে-ওঠা অভিযোগের তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠনের দাবিতে সংসদের চলতি সরব বিরোধী সাংসদেরা। অন্য দিকে, সরকার পক্ষের দাবি, ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে করা মন্তব্য প্রত্যাহার করে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন। এই দুই বিষয়ে ক্রমাগত উত্তাল হচ্ছে সংসদের দুই কক্ষই। পর পর মুলতুবি হয়েছে অধিবেশন। তা নিয়েই টুইট করেছিলেন মহুয়া।

মঙ্গলবার সংসদ মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর সংসদের চত্বরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্নায় পোস্টার-হাতে আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল সাংসদদের। ওই বিক্ষোভে দেখা গিয়েছিল মহুয়াকেও। বুধবারও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেন তৃণমূল সাংসদেরা। বুধবার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্র-বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁদের।

আরও পড়ুন
Advertisement