রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছিলই মহারাষ্ট্র সরকারের। কিছু এলাকায় নতুন করে লকডাউনের ইঙ্গিতও ছিল। আজ উদ্ধব ঠাকরে প্রশাসন জানিয়েই দিল, ক্রমশ রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় লকডাউন জারি হচ্ছে বিদর্ভ অঞ্চলের দুই জেলা যবৎমাল ও অমরাবতীতে।
যবৎমালে আজ রাত থেকে শুরু করে আগামী দশ দিন লকডাউন থাকবে। জেলাশাসক এম ডি সিংহ জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই জেলায় কোভিড রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল। বুধবার পর্যন্ত আক্রান্ত ৬০৬ জন। যবৎমালে ২৮ তারিখ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ। বিয়েতে নিমন্ত্রিতের সর্বোচ্চ সংখ্যা হবে পঞ্চাশ।
শনিবার রাত ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৭টা পর্যন্ত লকডাউন থাকবে অমরাবতী জেলায়। মঙ্গলবার ওই জেলায় নতুন কোভিড রোগীর সংখ্যা যেখানে ছিল ৮২, সেখানে এক দিনে তা বেড়ে হয়েছে ২৩০। সপ্তাহান্তে অমরাবতীতে বন্ধ থাকবে বাজার। জরুরি পরিষেবা অব্যাহত থাকবে। জেলাশাসক শৈলেশ নাভাল তাঁর নির্দেশে বলেছেন, ‘‘ভবিষ্যতে আরও কড়া লকডাউনের সম্ভাবনা এড়াতে আপাতত সপ্তাহান্তের লকডাউন জারি করা হল।’’ রোগী বাড়ছে আকোলা জেলাতেও। সেখানেও বিয়েবাড়িতে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা পঞ্চাশে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতির কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার এর আগে বলেছিল, রাজ্যগুলি লকডাউন করতে চাইলে কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হবে। জেলাশাসকদের উদ্দেশে মহারাষ্ট্র সরকারের চিঠিতে অবশ্য ‘লকডাউন’ কথাটি নেই। সেখানে তিন জেলার বিশেষ কিছু এলাকাকে কন্টেনমেন্ট এলাকা হিসেবে ঘোষণার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নতুন বছরে মহারাষ্ট্রে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত কাল ছিল সর্বাধিক (৪৭৮৭)। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আজ বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার। বৃহন্মুম্বই পুরসভা জানিয়েছে, প্রকাশ্যে মাস্ক ছাড়া ধরা পড়লে ২০০ টাকা তৎক্ষণাৎ জরিমানা করা হবে। গণ-পরিবহণ থেকে কর্মক্ষেত্র, অনুষ্ঠান— মাস্ক সর্বত্র বাধ্যতামূলক। লোকাল ট্রেনের যাত্রীরা মাস্ক পরছেন কি না, তা দেখতে ৩০০ জন মার্শাল মোতায়েন করা হবে। শহরের অন্যত্রও একই কাজের জন্য অতিরিক্ত মার্শাল রাখা হবে। গৃহ-নিভৃতবাসে থাকলে হাতের উল্টো দিকে বিশেষ ছাপ দেওয়া হবে। পুরসভার কমিশনার আই এস চহাল জানিয়েছেন, কোভিড-বিধি মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতে আচমকা হানা দেওয়া হতে পারে বিয়েবাড়ি, ক্লাব বা রেস্তরাঁগুলিতে। কোনও বিল্ডিংয়ে পাঁচ জন বা তার বেশি কোভিড রোগী পাওয়া গেলে সেটি সিল করে দেওয়া হবে। কেউ ব্রাজিল থেকে ফিরলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন বাধ্যতামূলক।