গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া। — ফাইল চিত্র।
ফের সতর্কবার্তা বিদেশ মন্ত্রকের। ইউক্রেন, ইজ়রায়েলের পরে এ বার সিরিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের উদ্দেশে। পশ্চিম এশিয়ার ওই গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের জন্য শুক্রবার মধ্যরাতে নির্দেশিকা জারি করেছে সাউথ ব্লক। সেখানে ‘প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোনো’, ‘সাবধানে চলাফেরা করা’ এবং ‘নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা’র কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সুযোগ থাকলে সিরিয়া ছাড়ার বার্তাও দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
গৃহযুদ্ধের আবহে সেখানকার ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তিত ভারত সরকার। গত এক সপ্তাহের যুদ্ধে সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো এবং সামরিক কৌশলগত অবস্থানের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ জনপদ হামা দখল করে নিয়েছে দুই বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনী। দুই মিত্র দেশ রাশিয়া এবং ইরানের সাহায্য সত্ত্বেও ক্রমাগত পিছু হটছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত সেনা।
এই পরিস্থিতিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত ভারতীয় নাগরিককে সিরিয়া ভ্রমণ এড়াতে বলা হচ্ছে।’’ সে দেশে যে ভারতীয় নাগরিকেরা রয়েছেন, তাঁদের সাহায্য করতে একটি হেল্পলাইন নম্বর এবং ইমেল আইডিও দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে তাঁর পরামর্শ— ‘‘যাঁদের পক্ষে সম্ভব, তাঁরা দ্রুত সিরিয়া ছেড়ে ফিরে আসুন।’’
রাজধানী দামাস্কাসমুখী প্রধান সড়কের উপরের হামার অবস্থান বিদ্রোহীদের কব্জায় চলে আসায় আসাদের ক্ষমতায় টিকে থাকা নিয়ে আরও সংশয় তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে। এইচটিএস নেতা আবু মহম্মদ আল-জোলানির বাহিনীর এই অগ্রগতি শেষ পর্যন্ত রাজধানী দামাস্কাসে পৌঁছে যেতে পারে বলে গত এক সপ্তাহের যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি দেখে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকে। কারণ, হামা দখলে আসায় দেশের উত্তর অংশের সঙ্গে আসাদ বাহিনীর যোগাযোগ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ল। বিদ্রোহী নেতা জোলানি এক ভিডিয়োবার্তায় বলেন, ‘‘৪০ বছর ধরে সিরিয়ার যে ক্ষত, তা দূর করতে হামা দখল আমাদের যোদ্ধাদের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’’ সেই সঙ্গে আসাদকে সামরিক সাহায্য না পাঠানোর জন্য পড়শি দেশ ইরাকের সরকার এবং শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলিকে বার্তা দিয়েছেন তিনি।