‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর প্রধান গুরপতবন্ত সিংহ পান্নুন। ছবি: সংগৃহীত।
শুধু ‘বৃহত্তর পঞ্জাব’ নিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র খলিস্তান গড়াই নয়, ভারতে নিষিদ্ধ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর প্রধান গুরপতবন্ত সিংহ পান্নুনের এমনই পরিকল্পনা ছিল। জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-র সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, কানাডায় আশ্রয় নেওয়া একাধিক নাশকতা মামলায় অভিযুক্ত পান্নুন পাকিস্তানের মদতে কট্টরপন্থী মুসলিম জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারত ভেঙে খলিস্তান এবং উর্দুস্তান রাষ্ট্র গড়ার ছক কষেছিল।
খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিংহ নিজ্জরের খুনের ঘটনায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিতর্কিত বিবৃতির পরে পর ভারত এবং কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন চলছে। এর মধ্যেই গত সপ্তাহে পান্নুন কানাডার হিন্দুদের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। একটি ভিডিয়ো-বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘ইন্দো-কানাডিয়ান হিন্দুরা, আপনারা কানাডা এবং এ দেশের সংবিধানের প্রতি নিজেদের আনুগত্য অস্বীকার করেছেন। আপনাদের গন্তব্য এখন ভারত। কানাডা ছেড়ে ভারতে যান।’’ এর পর ভারতে ১৬টি গুরুতর ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত পান্নুনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এনআইএ-
চলতি মাসেই স্বাধীন ও সার্বভৌম খলিস্তান রাষ্ট্রের দাবিতে কানাডার কট্টরপন্থী শিখ গোষ্ঠী এসএফজে অন্টারিও-সহ কয়েকটি এলাকায় জমায়েত এবং গণভোটের ডাক দিয়েছে। ভারতে নিষিদ্ধ এবং খলিস্তানপন্থী সংগঠন সাম্প্রতিক কালে কানাডার কয়েকটি ভারতীয় দূতাবাসে বিক্ষোভও দেখিয়েছে। কোনও ক্ষেত্রেই ট্রুডোর সরকার পদক্ষেপ করেনি। এই আবহে বুধবার ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ এলাকাগুলি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভারতীয় নাগরিকদের। ভারতীয় পড়ুয়াদের অবিলম্বে অটোয়ার ভারতীয় হাই কমিশন, টরন্টো এবং ভ্যাঙ্কুভারের কনস্যুলেট জেনারেলের দফতরে নাম নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের সতর্কবার্তায়।
প্রসঙ্গত, আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন-সহ কয়েকটি দেশে সক্রিয় রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এসএফজে। পঞ্জাবের মধ্যে ‘স্বাধীন এবং সার্বভৌম’ রাষ্ট্র গড়ার দাবি তুলেছে তারা। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এসএফজেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেন্দ্র। জানায়, ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার জন্য বড়সড় হুঁশিয়ারি এই সংগঠন। ২০২০ সালে সংগঠনের নেতা পান্নুনকে জঙ্গি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ইন্টারপোলকে ‘রেড নোটিস’ জারি করার অনুরোধও জানিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে আরও তথ্য চেয়ে সেই আবেদন ফেরত পাঠায় ইন্টারপোল। তার পরেও কানাডায় বসে পান্নুনের সংগঠন ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রচার করে চলেছে বলে জানিয়েছে এনআইএ। ভারত সরকার পান্নুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কানাডা সরকারকে অনুরোধও জানালেও তাতে ফল মেলেনি।