কেদারনাথে মৃত্যুর আগে শেষ নিজস্বী পূর্বার।
সোমবার সকাল তখন ৯টা। কেদারনাথ মন্দিরের সামনে ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিলেন পূর্বা, কৃতি এবং উর্বি। ওঁরা তিন জনই গুজরাতের ভাবনগরের বাসিন্দা। গত ১৪ অক্টোবর ভাবনগর থেকে তিন জনে উত্তরাখণ্ডে ঘুরতে যান। তিন জনের মধ্যে কৃতি এবং উর্বি দুই তুতো বোন। গুজরাতের তিন তরুণীই এই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন।
মন্দিরের সামনে নিজস্বী তোলেন পূর্বা। সেটি সমাজমাধ্যমে শেয়ারও করেন। কিন্তু সেটাই যে শেষ নিজস্বী হয়ে যাবে, ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি। পূর্বার এক আত্মীয় বলেন, “কেদারনাথ থেকে ভিডিয়ো কলে আমাদের মন্দির দেখাচ্ছিল। খুব খুশি দেখাচ্ছিল ওকে। একটি সেলফি তুলে ফেসবুকে শেয়ারও করেছিল। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস এ ভাবে যে ওকে কেড়ে নেবে মানতে পারছি না।” পূর্বার সেই হাসিমুখের নিজস্বী এখন সমাজমাধ্যমে ভাইরাল।
পূর্বার কাকা মলয় রামানুজ জানিয়েছেন, মাস দুয়েকের মধ্যে কানাডা যাওয়ার কথা ছিল পূর্বার। কিন্তু কানাডা যাওয়ার আগে এক বার কেদারনাথ ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে ভাইকে ফোন করে পূর্বা জানান, বুধবার বাড়িতে ফিরবেন। কিন্তু এ ভাবে কফিনবন্দি হয়ে ফিরতে হবে তা ভাবতে পারছেন না।
কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশী যাওয়ার জন্য সকাল ১১টা ৩৪ মিনিটে হেলিকপ্টারে চেপেছিলেন পূর্বারা। ঠিক দু’মিনিট পর হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পূর্বা, কৃতি এবং উর্বির। মৃত্যু হয়েছে পাইলট এবং আরও তিন জনের।
অন্য দিকে, কৃতির পরিবার জানিয়েছে, জন্মদিন উপলক্ষে উত্তরাখণ্ডে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দুই বোন। তা ছাড়া যে দিন দুর্ঘটনাটি ঘটে অর্থাৎ ১৮ অক্টোবর ছিল কৃতির জন্মদিন। জন্মদিন পালনের জন্য দুই বোন বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন। কিন্তু তার আগেই সব শেষ।
কৃতির বাবা কমলেশ বারাদ এক সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “কৃতি আমার একমাত্র সন্তান ছিল। মঙ্গলবার ওর জন্মদিন ছিল। সকাল ৯টায় আমি ওকে ভিডিয়ো কল করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলাম। ও আমাদের কেদারনাথ মন্দির এবং তার আশপাশ ভিডিয়ো কলে দেখিয়েছিল। কিন্তু আমার হাতে সময় কম থাকায় ফোন কেটে দিয়েছিলাম।”
ভাবনগরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন কৃতি। আর উর্বি একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁর সহপাঠী ছিলেন পূর্বা।