বিজেপির জাতীয় স্তরের নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। ফাইল চিত্র।
ইন্দোরের মেয়র থাকাকালীন বিপুল পরিমাণ টাকা দুর্নীতি ও নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির জাতীয় স্তরের নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের বিরুদ্ধে। বিশেষ আদালতে এই অভিযোগে মামলা হওয়ার পরে ১৭ বছর মধ্যপ্রদেশ সরকার কৈলাস ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর অনুমোদন আটকে রাখে। সম্প্রতি বিশেষ আদালত এই কারণ দেখিয়ে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে। মামলাকারী আইনজীবী কে কে মিশ্র এখন সেই অভিযোগ নিয়ে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের ইন্দোর বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন। একই সঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতির কথা প্রচার করছেন, সেই সময়ে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার গেরুয়া নেতার দুর্নীতি চাপা দিতে কেমন তৎপর হয়েছে— সে কথা তুলে ধরছে কংগ্রেস।
২০০০ সাল থেকে পাঁচ বছর ইন্দোরের মেয়র ছিলেন বিজয়বর্গীয়। তখন গরিব, প্রতিবন্ধী ও অনাথদের জন্য পেনশনের একটি প্রকল্প চালু করেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বদলে একটি সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সেই টাকা বিলি করে ইন্দোর পুরসভা। দেখা যায়, অস্তিত্বহীন লোকেদের নামে বড় একটা অঙ্কের টাকা বিলি হয়েছে। আবার কারও টাকা সই নকল করে অন্য কেউ তুলে নিয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, এ ভাবে পুরসভার ৩৩ কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এর পরে বিজয়বর্গীয়ের বিরুদ্ধে পেনশন কেলেঙ্কারির তদন্ত চেয়ে ইন্দোরের এমএলএ-এমপি দের জন্য বিশেষ আদালতে মামলা করেন মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার শাখার চেয়ারম্যান মিশ্র। নিয়ম অনুযায়ী মেয়রের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। কিন্তু ১৭ বছর ধরে তা ঝুলিয়ে রাখে মধ্যপ্রদেশ সরকার। ইতিমধ্যে ইন্দোরের সামান্য ‘রামকথা’ গায়ক থেকে বিজেপির জাতীয় নেতা হয়ে ওঠেন বিজয়বর্গীয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির দেখভালের দায়িত্ব দেয়। বিধানসভা নির্বাচনে হারের পরে রঙিন জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত কৈলাসের বিরুদ্ধে ‘কামিনী-কাঞ্চন’-এ আসক্তির অভিযোগ করে সরব হন তথাগত রায়ের মতো প্রবীণ বিজেপি নেতা। সম্প্রতি তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন নেতৃত্ব। কিন্তু পেনশন কেলেঙ্কারির তদন্তে মধ্যপ্রদেশ সরকার ১৭ বছরেও সাড়া না-দেওয়ায় বিশেষ আদালত ওই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। এর পরেই হাই কোর্টের ইন্দোর বেঞ্চের কাছে বিচার চেয়ে নতুন মামলা করেছেন মিশ্র। তিনি বলেছেন, “দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের আড়াল করতে তৎপর বিজেপি সরকার। এর পরেও প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেন!”