BBC

৫০ ঘণ্টা পার! বিবিসির মুম্বই এবং দিল্লির দফতরে এখনও ‘সমীক্ষা’ চালাচ্ছে আয়কর বিভাগ

শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে। ৫০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি)-এর দিল্লি এবং মুম্বইয়ের বিবিসির দফতরে আয়কর বিভাগের ‘সমীক্ষা’ চলছে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:২০
IT Survey at BBC premises in India continues in third day

বিবিসির মুম্বই এবং দিল্লির দফতরে ‘সমীক্ষা’ চালাচ্ছে আয়কর বিভাগ। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে। ৫০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি)-এর দিল্লি এবং মুম্বইয়ের দফতরে আয়কর বিভাগের ‘সমীক্ষা’ চলছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমটির দফতরে ‘সমীক্ষা’ কখন শেষ হবে, সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কিছু জানায়নি কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।

এমন পরিস্থিতি হতে পারে আঁচ করে বুধবার সকালে কর্মীদের মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকতে বলে ইমেল পাঠিয়েছিলেন বিবিসি কর্তৃপক্ষ। বিবিসির ভারতীয় কর্মীদের আয়কর আধিকারিকেরা যে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন, তাতে পূর্ণ সহযোগিতার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে সংবাদসংস্থার কর্মীদের সংস্থার মনোবিদের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে। গোড়া থেকেই আয়কর বিভাগ ওই হানাকে ‘রুটিন সমীক্ষা’ বলে দাবি করেছে। মূলত করফাঁকি ও ট্রান্সফার প্রাইসিং সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখতেই ওই সমীক্ষা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়কর দফতর।

Advertisement

সরকারি একটি সূত্র জানাচ্ছে, আয়কর আধিকারিকেরা সংস্থার কম্পিউটার ও ল্যাপটপে ‘শেল কোম্পানি’, ‘ফান্ড ট্রান্সফার’, ‘ফরেন ট্রান্সফার’-এর মতো শব্দগুলি খুঁজেছেন। পাশাপাশি, বিবিসির আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত বিভিন্ন বৈদ্যুতিন এবং কাগুজে নথির প্রতিলিপি করা হচ্ছে। মঙ্গলবারই সংস্থার সন্ধ্যাকালীন বিভাগের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিল বিবিসি। এর পর বুধবার দুপুর থেকে সংস্থার দুই শাখার শীর্ষকর্তা ছাড়া বাকিদের বাড়ি থেকেই কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগেই বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’-এর প্রদর্শন বন্ধের জন্য ‘তৎপরতা’ শুরু করেছিল মোদী সরকার। দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় গোধরাকাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার ওই তথ্যচিত্রে। ‘দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তথ্যচিত্রটি তৈরি।

যদিও বিবিসি দাবি করে, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি বানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জানুয়ারির শেষে কেন্দ্রের তরফে ইউটিউব এবং টুইটারকে বিবিসি-র তথ্যচিত্রের লিঙ্ক সমাজমাধ্যম থেকে তুলে নিতে নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি, আইটি রুলস ২০২১-এর জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে একাধিক টুইট তুলে নেওয়ার জন্যও কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতারা তখন থেকেই বিষয়টি ‘সেন্সরশিপ’ আখ্যা দিয়ে আসছেন। মঙ্গলবার বিবিসির দফতরে আয়কর হানার শুরুর পরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার’ অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement