(বাঁ দিক থেকে) সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খড়্গে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করা হয়নি। তবে জরিমানা হিসাবে কাটা হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খড়্গের সাংবাদিক বৈঠকে তোলা অভিযোগের পরে এমনই সাফাই মিলেছে আয়কর দফতর সূত্রে। ওই সূত্রের খবর, স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহ্যবাদী শতাব্দীপ্রাচীন রাজনৈতিক দলটির বিরুদ্ধে মোট তিনটি কর সংক্রান্ত মামলার কারণে এই পদক্ষেপ।
২০১৪-১৫ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত সাত বছরের আয়কর সংক্রান্ত রিটার্ন পর্যালোচনা করেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। আয়কর আইনের ১৩(১) ধারা লঙ্ঘনের প্রমাণ মেলার পরেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেনের অভিযোগ, কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে আয়কর দফতর জোর করে ১১৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছে। ১১টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী কোনও রাজনৈতিক দলকে আয়কর দিতে হয় না। কিন্তু কংগ্রেসের চারটি ব্যাঙ্কে ১১টি অ্যাকাউন্টে ২১০ কোটি টাকার জরিমানা ধার্য হয়েছে!
এ ক্ষেত্রে ‘কারণ’ দেখানো হয়েছে, কংগ্রেসের অ্যাকাউন্টে ১৯৯ কোটি টাকার মধ্যে ১৪.৪৯ লক্ষ টাকা নগদে জমা পড়েছিল। কংগ্রেসের সাংসদেরা ওই চাঁদা দিয়েছিলেন। মাত্র ০.০৭% নগদে লেনদেনের জেরে ১০৬% জরিমানা করা হয়েছে। চাঁদা মিলেছিল ২০১৭-১৮-তে। তার সাত বছর পরে, ভোটঘোষণার মাত্র তিন সপ্তাহ আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই পুরনো কারণে ২১০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার পরে ১১৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা জোর করে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
মাকেন বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘এতেও যথেষ্ট হয়নি। গত সপ্তাহে আয়কর দফতর নতুন নোটিস পাঠিয়েছে। ১৯৯৩-৯৪ সালে, যখন প্রয়াত সীতারাম কেশরী কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন, তার ৩১ বছর পরে জরিমানা গুনে দিতে বলা হয়েছে।’’ এ প্রসঙ্গে আয়কর দফতরের যুক্তি— ১৯৯৪-৯৫ সালের আয়কর বিবাদ সংক্রান্ত ওই মামলা ২০১৬ পর্যন্ত বিচারাধীন ছিল। আদালতের রায়ের পরে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হয়েছে।
লোকসভা ভোটে যাতে কংগ্রেস প্রচার, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অর্থ খরচ করতে না পারে, তার জন্যই প্রথমে কংগ্রেসকে আয়কর দফতরের নোটিস ও তার পরে কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সনিয়া, রাহুল ও খড়্গে। যদিও বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার কটাক্ষ, ‘‘কংগ্রেস লোকসভা ভোটে হার নিশ্চিত বুঝে আগেভাগেই অজুহাত খাড়া করছে। ঐতিহাসিক হারের ভয়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব দেশের গণতন্ত্র, প্রতিষ্ঠান নিয়ে কান্নাকাটি করছেন। নিজেদের অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ার জন্য আর্থিক সমস্যাকে দায়ী করছেন।’’