ইজ়রায়েলি পরিচালক নাদাভ লাপিড। ফাইল ছবি।
‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ নিয়ে তাঁর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্কের মাঝে ক্ষমা চেয়ে নিলেন ইজ়রায়েলি পরিচালক নাদাভ লাপিড। তিনি জানিয়েছেন, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ভাবাবেগে আঘাত করার কোনও উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁদের অপমান করতে চাননি তিনি। তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন লাপিড। যাঁদের খারাপ লেগেছে, তাঁদের কাছে পরিচালক ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।
তবে ক্ষমা চাইলেও নিজের বক্তব্যে অনড় লাপিড। তিনি দাবি করেছেন, বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ ছবিটি ‘অশ্লীল’, ‘হিংসাত্মক’ এবং ‘প্রচারমূলক’। এ কথা তিনি জোর গলায় বার বার বলতে পারেন বলে জানান লাপিড।
গোয়ায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ প্রদর্শিত হয়। উৎসবের শেষ দিনে ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া বা ইফির জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লাপিড বিবেক অগ্নিহোত্রীর ছবিটির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি জানান, এই ধরনের ছবি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে স্থান পাওয়ার যোগ্য নয়। ছবিটিকে ‘অশ্লীল’ এবং ‘প্রচারমূলক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
লাপিডের এ হেন মন্তব্যের পর বিতর্কের ঝড় ওঠে। ইজ়রায়েলি রাষ্ট্রদূত তাঁর সমালোচনা করে ক্ষমা চেয়ে নেন। ইফির তরফে জানানো হয়, লাপিডের মতামত ব্যক্তিগত। তবে সেই দাবি উড়িয়ে দিয়ে লাপিড জানিয়েছেন, শুধু তিনি একা নন, জুরি বোর্ডের অন্যান্য সদস্যেরও ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস্’ ছবিটি নিয়ে একই কথা মনে হয়েছিল।
লাপিড বলেন, ‘‘কাশ্মীরের ঘটনায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি আমার বিপুল শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি যা বলেছি, তা এই বিষয়ের কথাই নয়। আমি হাজার বার বলতে পারি, আমি কোনও রাজনৈতিক বা ঐতিহাসিক বিষয়ে মন্তব্য করিনি। আমি ছবিটি নিয়ে মন্তব্য করেছিলাম। আমার মতে এমন গুরুতর একটি বিষয় আরও গুরুগম্ভীর একটি ছবি দাবি করে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি যা বলেছি তা মোটেই আমার ব্যক্তিগত মতামত ছিল না। আমাদের সকলেরই ছবিটি দেখে মনে হয়েছে, সেখানে ধারাবাহিক ভাবে ঘটনা অতিরঞ্জিত করা হয়েছে, অশ্লীল এবং হিংসাত্মক বিষয় টেনে আনা হয়েছে। কোনও স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে হিংসার বীজ বপন করার উদ্দেশ্যেই এমনটা করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে আমাদের সকলের।’’
লাপিডের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিবেক চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন, তাঁর ছবিতে তথ্যের বিকৃতি প্রমাণ করতে পারলে তিনি পরিচালনা ছেড়ে দেবেন। সে প্রসঙ্গে লাপিডের বক্তব্য, ‘‘পরিচালক আমার কথায় ক্ষুণ্ণ হয়েছেন, সেটাই স্বাভাবিক। আমার ছবিকে কেউ এমন বললে আমারও খারাপ লাগত। কিন্তু উনিও ভাল করেই জানেন, ছবির বিষয়বস্তু নিয়ে আমি কিছু বলিনি। যা ঘটেছে, তা আমি কখনও অস্বীকার করিনি।’’