মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-নীতীশ কুমার। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক ডেকেও তা বাতিল করতে হয়েছে কংগ্রেসকে। তবে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির সংসদীয় নেতাদের নিয়ে ঘরোয়া একটি বৈঠক করতে চায় কংগ্রেস। তা অবশ্য ‘ইন্ডিয়া’র নামে নয়। বুধবার ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদলগুলির নেতাদের নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, জেডিইউ-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দলের শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে কোনও আলোচনাই করা হয়নি। ফলে ৬ ডিসেম্বর ‘ইন্ডিয়া’র নামে ডাকা বৈঠক স্থগিত করতে একপ্রকার ‘বাধ্য’ হয় কংগ্রেস। তবে সেই বুধবারেই ঘরোয়া বৈঠকটি করতে চান কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার চার রাজ্যের ভোটের ফলপ্রকাশ শুরু হওয়ার খানিক ক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের কথা সব নেতাদের জানাচ্ছেন। যদিও রবিবার রাত পর্যন্ত তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কোনও ফোন আসেনি বলেই বাংলার শাসদকদলের নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন। সোমবার রাজভবন থেকে বেরিয়ে মমতাও বলেন, ‘‘আমাকে কেউ কিছু জানাননি। আমার আগে থেকে উত্তরবঙ্গে কর্মসূচি ঠিক করা রয়েছে।’’ তার পর একে একে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবও জানান, তাঁরা দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না।
সোমবার থেকে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে। তাই কংগ্রেসের তরফে সব দলের সংসদীয় নেতাদের বৈঠকে উপস্থিত করানোর চেষ্টা চলছে বলেই সূত্রের খবর। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিজেপির জয়ে তারা উচ্ছ্বসিত। অন্যদিকে কংগ্রেসও চাইছে শীতকালীন অধিবেশনে গেরুয়া শিবিরকে চাপে রাখতে। সে কারণেই বিরোধী ঐক্যের ছবি তুলে ধরতে খড়্গেরা কিছুটা অতিসক্রিয় বলে মনে করা হচ্ছে।
রবিবার চার রাজ্যে ফল ঘোষণার দিনেই ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক ডাকে কংগ্রেস। তারিখ নিয়ে অনেকে বলেছিলেন, ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনটিকে বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু তা হচ্ছে না। পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলে জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস খানিকটা বেকায়দায় পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তা ছাড়া ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলিও কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’র মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। এমতাবস্থায় জোট-বৈঠক নিয়ে কিছুটা ‘ধীরে চলো’ নীতি নিতে চাইছে এআইসিসি। সূত্রের খবর, ডিসেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ফের একবার ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক ডাকার চেষ্টা করা হবে কংগ্রেসের তরফে। আগে থেকে সময় নিয়ে তা করতে চান খড়্গেরা।