(বাঁ দিক থেকে) শিশির অধিকারী, অমিত শাহ এবং কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই শাহের কাছেই শুভেন্দুর বাবার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে দরবার করেছে তৃণমূল। শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী, যিনি খাতায় কলমে এখনও তৃণমূল সাংসদ, তাঁকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালানোর আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ সেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকারও করছেন।
মঙ্গলবার সকালেই সেই জবাবি চিঠির ছবি দিয়ে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল। তিনি জানিয়েছেন, শাহ যেমন ওই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন, তেমনই সিবিআই সূত্রেও তিনি খবর পেয়েছেন, দিল্লি বাধা না দিলে এ ব্যাপারে তদন্ত নিশ্চিত!
কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ শিশির। তবে এখন দলের কাছে তাঁর পরিচয় একটাই। তিনি রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক তথা বিধানসভার প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর বাবা। গত কয়েক দিন ধরেই শুভেন্দু রাজ্যের তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ‘চোর’ বলে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবারই সাদা টি-শার্টে কালো হরফে ‘মমতা চোর’ লিখে সভা করেন তিনি। এর পরেই শুভেন্দুর বাবা শিশিরের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগ করলেন কুণাল। এক্স হ্যান্ডলে কুণাল লেখেন, ‘‘শিশির অধিকারীর সম্পত্তিতে বিপুল বৃদ্ধি ও অসঙ্গতি। তদন্ত চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। অমিত শাহের তরফ থেকে উত্তরে জানলাম চিঠি পেয়েছেন। সিবিআই সূত্র থেকে জানলাম চিঠি পৌঁছেছে। দিল্লি বাধা না দিলে তদন্ত নিশ্চিত।’’
কুণালের দাবি, ‘‘সারদা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে এর তদন্ত দরকার অবিলম্বে। শিশিরবাবুকে হেফাজতে নিয়ে ওই তদন্ত করতে হবে।’’ তবে কুণালের এই দাবির পাল্টা জবাব দিয়েছেন শিশিরও।
বেলা ১১টা নাগাদ ওই পোস্ট করেছিলেন কুণাল। তার এক ঘণ্টার মধ্যেই জবাব আসে শিশিরের কাছ থেকে। একটি চ্যানেলকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে শিশিরকে বলতে শোনা যায়, ‘‘যে সম্পত্তির কথা বলা হচ্ছে, সেটি ১৯৬৮ সালে কেনা। আর যিনি এই ব্যাপারে কথা বলছেন, তিনি তখন জন্মাননি।’’
তবে মঙ্গলবার এই চিঠির কথা প্রকাশ্যে আনলেও খাতায় কলমে দলের সাংসদ শিশিরের বিরুদ্ধে তদন্তের আবেদন এক মাস আগেই জানিয়েছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র। এক্স হ্যান্ডলে তাঁর পোস্টের সঙ্গে শাহের কাছ থেকে পাওয়া প্রাপ্তি স্বীকারের চিঠির ছবি দিয়েছেন কুণাল। তাতেই দেখা যাচ্ছে তারিখটি। জবাবি চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘লোকসভার সাংসদ শিশির অধিকারীকে নিয়ে আপনার কাছ থেকে পাওয়া গত ৮ নভেম্বরের চিঠিটি হাতে পেলাম।’’ আর শাহের এই চিঠি কুণালের হাতে আসে দিন চারেক আগে গত ১ ডিসেম্বর।