প্রলয় ক্ষেপণাস্ত্র। —ফাইল চিত্র।
আত্মনির্ভর ভারতের নতুন নমুনা দেখা যাবে এ বারের সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে। এই প্রথম বার চিনা আক্রমণ ঠেকাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) মোতায়েন হালকা ‘ট্যাকটিকাল’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘প্রলয়’ দিল্লির কর্তব্যপথে চাক্ষুষ করবেন দেশবাসী।
২০১৯ সালের অগস্টে ওড়িশার চাঁদিপুর উপকূলে ‘প্রলয়ের’ চূড়ান্ত দফার পরীক্ষা হয়েছিল। তার পরেই স্বল্প পাল্লার এই ব্যালিস্টিক ‘ভূমি থেকে ভূমি’ ক্ষেপণাস্ত্র ভারতীয় সেনায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে চিনা ফৌজের আগ্রাসন এবং গালওয়ান উপত্যকায় রক্তাক্ত সংঘর্ষের পরে এলএসিতে ‘প্রলয়’ মোতায়েন করে ভারতীয় সেনা।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থা (‘ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’ বা ডিআরডিও)-র বিজ্ঞানীদের তৈরি কঠিন জ্বালানি চালিত এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ডিআরডিওর তৈরি ‘ভূমি থেকে ভূমি’ ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র পৃথ্বীর আদলে তৈরি ‘প্রলয়’ তুলনায় হালকা। ফলে উঁচু পার্বত্য এলাকায় ব্যবহার করা অনেক সহজ। তা ছাড়া পরমাণু অস্ত্র বহনের উপযোগী উন্নত প্রযুক্তির এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মাঝ আকাশে গতিপথ বদলাতে সক্ষম। ফলে শত্রুপক্ষের ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রকে এড়িয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে ‘প্রলয়’।
কয়েক বছর আগেই রীতি বদলের সূচনা করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে আত্মনির্ভরতার বার্তা দিতে দেশে তৈরি অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শন শুরু হয়েছিল। সেই ধারা মেনেই এ বার ২৬ জানুয়ারি সামরিক উৎপাদন ক্ষেত্রে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র নতুন কয়েকটি নমুনার সঙ্গে দেশবাসী পরিচিত হবেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, এ বারের সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দেশে তৈরি সুপারসনিক (শব্দের চেয়ে বেশি গতিবেগসম্পন্ন) ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র ‘ব্রহ্মস’ প্রদর্শিত হবে। সেই সঙ্গে থাকবে, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ডিআরডিও এবং ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড (বিডিএল)-এর তৈরি স্বল্পপাল্লার ‘ভূমি থেকে আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ এবং ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ‘নাগ’ এবং ‘মাল্টি ব্যারেল রকেট সিস্টেম’ ‘পিনাকা’র নতুন সংস্করণ। গত দু’বছরের মতোই এ বারও সাধারণতন্ত্র দিবসে ব্রিটিশ ২৫ পাউন্ডারের বদলে দেশে তৈরি ১০৫ মিলিমিটার কামান থেকে আনুষ্ঠানিক ‘২১ তোপধ্বনি’ করা হবে।