আমেরিকা থেকে ‘ম্যাকাব্রে হেলফায়ার আরএনএক্স’ ক্ষেপণাস্ত্র এবং মার্ক-৫৪ টর্পেডো পাচ্ছে ভারত। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আল কায়দা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি এবং ইরানের জেনারেল কাশেম সোলেমানিকে হত্যা করতে আমেরিকা সেনা ব্যবহার করেছিল সেই ‘গোপন অস্ত্র’। ‘ম্যাকাব্রে হেলফায়ার আরএনএক্স’ ক্ষেপণাস্ত্র। সেই ‘ওয়ারহেড-লেস মিসাইল’ এ বার ভারতীয় নৌসেনাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার।
সেই সঙ্গে আমেরিকা থেকে ভারতীয় নৌসেনা পাচ্ছে ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী মার্ক-৫৪ টর্পেডো। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় নৌসেনাকে শক্তিশালী করে তুলতে আমেরিকা থেকে ৩৭,৬০০ কোটি টাকার সামরিক সরঞ্জাম কেনার চুক্তি হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ওই দুই মারণাস্ত্র। আমেরিকা থেকে এমএইচ ৬০ রোমিও হেলিকপ্টারে ব্যবহারযোগ্য ওই হেলফায়ার এবং মার্ক-৫৪ পেলে ভারতীয় নৌপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত হবে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
২০২২-এর অগস্টে আফগানিস্তানের কাবুলে আমেরিকার প্রিডেটর ড্রোন থেকে ছোড়া হেলফায়ার ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল জাওয়াহিরিকে। ‘নিনজা বোমা’ নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্রের বৈশিষ্ট্য হল লক্ষ্যবস্তুকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে, কিন্তু জোরালো কোনও বিস্ফোরণ হবে না। ক্ষতি হবে না ‘মূল লক্ষ্যের’ আশপাশের বাড়িঘর এবং মানুষজনের। জাওয়াহিরি, সোলেমানি ছাড়াও পশ্চিম এশিয়ায় আল কায়দার অন্যতম শীর্ষনেতা আবু আল-খায়ের আল-মাসরিকে হত্যা করতেও ধারালো ব্লেড-যুক্ত এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল পেন্টাগন। কয়েক মাস আগেই আমেরিকা থেকে প্রিডেটর ড্রোন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি।
আমেরিকার সংস্থা লকহিড মার্টিনের তৈরি রোমিয়ো হেলিকপ্টার সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা শত্রু ডুবোজাহাজ চিহ্নিত এবং ধ্বংস করায় পারদর্শী। পাশাপাশি, শত্রু যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা এবং সমুদ্রের বুকে নজরদারি, তল্লাশি এবং উদ্ধারকার্য চালাতেও অত্যন্ত দক্ষ এই কপ্টার। জমি বা বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজের পাশাপাশি, অপেক্ষাকৃত ছোট ক্রুজার এবং ডেস্ট্রয়ার জাতীয় রণতরী থেকেও ওঠানামা করতে পারে রোমিয়ো। প্রসঙ্গত, চার দশকের পুরনো ব্রিটিশ সি কিং হেলিকপ্টারের বদলে ২৪টি রোমিয়ো কেনার বিষয়ে দু’বছর আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ২০২০ সাল থেকে ধাপে ধাপে ভারতীয় নৌসেনার হাতে আসছে ওই কপ্টারগুলি।
মার্ক-৫৪ লাইটওয়েট টর্পেডোর পাশাপাশি, ভারতকে জাহাজ-বিধ্বংসী হারপুন ব্লক-টু ক্ষেপণাস্ত্রও বিক্রি করা হতে পারে বলে বছর কয়েক আগে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় পেন্টাগনের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা নৌবাহিনীর ‘তৎপরতা’ রুখতেই ওই পদক্ষেপ বলে সে সময় জানিয়েছিল আমেরিকা। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে ভারত মহাসাগরে চিনা ডুবোজাহাজের মোকাবিলায় কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে রোমিও থেকে ব্যবহারযোগ্য মার্ক-৫৪।