এ বার জরুরি ভিত্তিতে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে ভারত। ছবি: সংগৃহীত।
উন্নয়নের পাশাপাশি আত্মরক্ষার প্রস্তুতি! সীমান্তে চিনা ফৌজের আগ্রাসনের আশঙ্কায় কি পুরোদস্তুর যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে ভারত? প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে এমনটাই মনে করছেন সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
লাদাখ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) চিনা ফৌজের সক্রিয়তার কথা মাথায় রেখে এ বার জরুরি ভিত্তিতে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে ভারত। একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত সেনা এবং সামরিক সর়ঞ্জাম চিন সীমান্তে পাঠানোর জন্য বিশেষ ভাবে সড়ক, সুড়ঙ্গ এবং রেলপথ নির্মাণে গুরুত্ব দিতে চাইছে নয়াদিল্লি।
বস্তুত গত বছরই সংসদে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী অজয় ভট্ট চিন সীমান্তে পরিকাঠামো উন্নয়নে মোদী সরকারের তৎপরতার বার্তা দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, চিন, পাকিস্তান, মায়ানমার এবং বাংলাদেশ সীমান্তে ৩,৫৯৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে মোট ২০,৭৬৭ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র চিন সীমান্তে ২,০৮৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে খরচ হয়েছে ১৫,৪৭৭ কোটি টাকা।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চিনা ফৌজের বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা থেকে সামরিক সরঞ্জাম রক্ষা করার উদ্দেশ্যে এলএসি-র অদূরে নির্মীয়মাণ সড়ক-সুড়ঙ্গগুলিকে ক্ষেপণাস্ত্র এবং গোলাবারুদ মজুত করার কাজে ব্যবহারেরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই! পাশাপাশি, আগামী দিনে যে সুড়ঙ্গগুলি তৈরি হবে, সেখানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ রাখার বিশেষ পরিকাঠামো গড়া হবে। ‘বহুমুখী সড়ক-সুড়ঙ্গ’ গড়ার এই পরিকল্পনা রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, লাদাখের পর অরুণাচল সীমান্তে চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তৎপরতা বাড়াতে শুরু করেছে। সম্প্রতি তাওয়াং সেক্টরে চিনা অনুপ্রবেশের ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে তাওয়াংকে সুড়ঙ্গপথে জুড়তে সক্রিয় হয়েছে কেন্দ্র। ১৩ হাজার ফুটের সেলা গিরিপথের (পাস) তৈরি হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গপথ। আড়াই কিলোমিটার লম্বা এই দু’লেনের টানেলের মূল সুড়ঙ্গের পাশাপাশি থাকছে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহারের সুড়ঙ্গপথও।
শীতকালে তাওয়াং পৌঁছানোর জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বালিপাড়া-চরিদুয়ার রাস্তা ব্যবহার করেন। কারণ অতিরিক্ত তুষারপাতের কারণে সেলা পাসের মাধ্যমে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রস্তাবিত সেলা পাস সুড়ঙ্গটি বৈশাখী সেতু এবং নুরানংয়ের সঙ্গে যুক্ত করবে। যে কোনও মরসুমে যানবাহন চলাচলের উপযুক্ত এই সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হলে তাওয়াং যাওয়ার দূরত্ব প্রায় ৮-৯ কিলোমিটার কমে যাবে বলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর।