মহাকাশ বাণিজ্যে এ বার নয়াদিল্লি-বেজিং প্রতিযোগিতা। ফাইল চিত্র।
বাজার প্রায় ৪ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি ডলারের! টাকার অঙ্কে প্রায় ৩ কোটি ৬৬ লক্ষ কোটির! আর তারই দখল নিতে নয়াদিল্লি-বেজিং দ্বন্দ্ব বাধতে চলেছে মহাকাশে!
এ বার মহাকাশ বাণিজ্যেও চিনের সঙ্গে ভারত লড়াইয়ে নামতে চলেছে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র বাণিজ্যিক শাখা নিউ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড (এনএসআইএল)-এর তত্ত্বাবধানে গত কয়েক বছর ধরেই চলছে সেই প্রস্তুতি। আর্থিক চুক্তির ভিত্তিতে ধারাবাহিক ভাবে বিদেশি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো হচ্ছে। এ বার সেই প্রক্রিয়া আরও বাণিজ্যমুখী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরো।
মহাকাশ বাণিজ্যের উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা প্রথম তুলে ধরেছিল ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস-এক্স। নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ধারাবাহিক ভাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এমনকি, মহাকাশচারীদের খাবার সরবরাহের কাজ করছে তারা। স্পেস-এক্সের পথ অনুসরণ করে চিনা মহাকাশ সংস্থাও ইতিমধ্যেই বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণে অংশ নিতে শুরু করেছে।
গত মাসে নিউ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে এক সঙ্গে ৩৬টি বিদেশি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে নিয়ে গিয়েছিল ইসরোর বিজ্ঞানীদের তৈরি এলভিএম-৩ মার্ক-৩। তার মধ্যে অধিকাংশ উপগ্রহই ছিল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সংক্রান্ত। আগামী দিনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চাহিদা আরও বাড়বে। মহাকাশ বাণিজ্যে জড়িত ব্রিটিশ সংস্থা আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ংয়ের মতে এর ফলে বাড়বে বাণিজ্যের সম্ভবনাও।
বিজ্ঞানীদের মতে ভারতের মহাকাশ গবেষণা আমেরিকা ও চিনের থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। বড়সড় মহাকাশ অভিযানের জন্য ভারতের রকেট প্রযুক্তি এখনও ততটা উন্নত হতে পারেনি। ভারত এখনও পর্যন্ত এক জন মহাকাশচারীকেও পাঠাতে পারেনি মহাকাশে। মহাকাশ স্টেশন বানানোরও কোনও পরিকল্পনা নেই ভারতের। অন্য দিকে ইতিমধ্যেই চিনের দু’জন মহাকাশচারী ৩০ দিন কাটিয়ে ফেলেছেন মহাকাশে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সমর্থন এবং তাইওয়ান সঙ্কটের কারণে আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলির ‘নিশানায়’ পড়েছে বেজিং। সে কারণে বরাত পেতে আগামী দিনে তারা অসুবিধায় পড়তে পারে। আর সেখানেই ভারতের সুবিধা বলে মনে করা হচ্ছে।