India-Canada Relation

সমাজমাধ্যমের সঙ্গে কানাডার আইনি জটের জন্য দেখা যায়নি জয়শঙ্করের বার্তা, সমালোচনায় বিঁধেছিল বিদেশ মন্ত্রক

নভেম্বরের শুরুতে ব্রাম্পটনে এক মন্দিরের সামনে হামলা চলেছিল। ওই মন্দিরের বাইরে ভারতীয় উপদূতাবাসের একটি অস্থায়ী শিবির ছিল। সেখানেও হামলা চলেছিল বলে অভিযোগ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৫০
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নভেম্বরের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিলেন। ওই সময়ে জয়শঙ্কর এবং সে দেশের বিদেশমন্ত্রী পেনি ওয়াং অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম ‘অস্ট্রেলিয়া টুডে’-কে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। ওই অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক দাবি করেন, জয়শঙ্করের বার্তাকে ‘ব্লক’ করার জন্য কানাডার সরকার ওই সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজটি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়তেই ভারতের বিদেশমন্ত্রকও কানাডার প্রশাসনের সমালোচনা করে। যদিও পরে জানা যায়, জয়শঙ্করের বক্তব্যকে ‘ব্লক’ করার জন্য ওই নিষেধাজ্ঞা নয়। ‘মেটা’ (যে সংস্থার অধীনস্থ ফেসবুক)-র সঙ্গে কানাডার সরকারের আইনি জটিলতার কারণেই ওই সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজের পোস্টগুলি কানাডায় দেখা যাচ্ছে না।

Advertisement

এক তথ্য যাচাই প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, কানাডার অনলাইন নিউজ় অ্যাক্ট, ২০২৩ অনুসারে, মেটা বা গুগলের মতো প্লাটফর্মগুলিতে সংবাদ সংক্রান্ত কোনও তথ্য পোস্ট করতে গেলে অর্থ দিতে হবে। এই আইনের কারণে মেটার সঙ্গে কানাডার সরকারের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। যার জেরে মেটা কানাডায় যে কোনও ধরনের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক খবর পোস্ট করা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ, জয়শঙ্করের বক্তব্যকে ‘ব্লক’ করার উদ্দেশ্যে কানাডায় ওই অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজ নিষিদ্ধ হয়নি বলে জানিয়েছে ওই তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান।

তবে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমের ওই ‘ব্লক’ করার দাবি প্রথমে প্রকাশ্যে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জওসওয়াল বলেছিলেন, “আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি। এ সব করে বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ে কানাডার ভণ্ডামি আবারও প্রকাশ পাচ্ছে।” অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া জয়শঙ্করের সাক্ষাৎকারেও কানাডার সঙ্গে ভারতের বর্তমান কূটনৈতিক টানাপড়েনের বিষয়টি উঠে এসেছিল। ভারতীয় কূটনীতিকদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। জয়শঙ্করের মতে, যা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। এর পর পরই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের কড়া সমালোচনা ভারত-কানাডা সম্পর্কের শীতলতাকে আরও বেশি করে ফুটিয়ে তুলেছিল।

কানাডার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে বেশ টলমল। খলিস্তানিপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যার পর থেকেই কানাডা এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। এই আবহেই সম্প্রতি কানাডার ব্রাম্পটনে একটি মন্দিরের সামনে হামলা চলেছিল। ওই ঘটনাতেও অভিযোগ উঠেছিল খলিস্তানপন্থীদের বিরুদ্ধে। হামলার নিন্দা করেছিল ভারত। কানাডার প্রশাসনকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য। অস্ট্রেলিয়া সফরকালেই ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছিলেন, “কানাডায় হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা গভীর উদ্বেগজনক।” বিদেশমন্ত্রী আরও জানিয়েছিলেন, তথ্য ও প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করার নকশা তৈরি করেছে কানাডা। কানাডায় চরমপন্থী শক্তিকে রাজনৈতিক পরিসর দেওয়া হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় লেখা হয়েছিল, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের অস্ট্রেলিয়া থেকে সম্প্রচারিত হওয়া একটি বার্তা কানাডায় ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পরে জানা যায়, সেটি ভুল। কানাডার সঙ্গে মেটা কর্তৃপক্ষের আইনি জটিলতার কারণে কোনও স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক সংবাদ সে দেশে মেটার প্লাটফর্মগুলিতে দেখা যায় না। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।)

আরও পড়ুন
Advertisement