শিঙাড়া বিতর্কে উত্তপ্ত হিমাচলের রাজনীতি। (ইনসেটে) মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
শিঙাড়ার জন্য সিআইডি তদন্ত! শিঙাড়়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক আর বিভিন্ন মহলে হাসাহাসি হতেই হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর সাফাই, ‘‘আমি শিঙাড়া খাই না। শিঙাড়া কোথা থেকে এসেছে তা-ও জানি না!’’ এর পরই তিনি পাল্টা আক্রমণের সুরে বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে অহেতুক রাজনীতির চেষ্টা চলছে। তবে এই বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্বও দিতে চাইছি না।’’
কটাক্ষের সুরে তাঁকে আরও বলতে শোনা যায়, এটা বেশ ভাল যে, সামান্য বিষয় নিয়ে কী ভাবে রাজনীতি শুরু হয়েছে। তবে এ বিষয়ে যা ব্যাখ্যা দেওয়ার তা রাজ্য পুলিশের ডিজি দিয়ে দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, যে শিঙাড়া তাঁর জন্য আনা হয়েছিল, সেগুলি নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে গেল কী ভাবে, কেনই বা তাঁর জন্য আনা শিঙাড়া খেয়ে নেওয়া হল? প্রশ্ন শুনেই হেসে ফেলেন সুখু। তার পরই বলেন, ‘‘আমি শিঙাড়া খাই না। স্বাস্থ্যের কারণে বাইরের খাবারও খাই না, এটাও আমার লোকজন জানেন। তা ছাড়া শিঙাড়া কোথা থেকে এসেছে তা-ও জানি না।’’
এর পরই সুখু অভিযোগ তোলেন, তাঁর সরকারকে বার বার ভয় দেখানো হচ্ছে। হিমাচলে কোনও কিছু হলে তার চর্চা এই রাজ্যের তুলনায় দিল্লিতে বেশি হয় বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
সিআইডির ডিজি সঞ্জীব রঞ্জন জানিয়েছেন, গোটা ঘটনাটিকে খুব ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিও শুরু হয়েছে গিয়েছে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ডিআইজির কথায়, ‘‘শিঙাড়া বিতর্কে সিআইডি তদন্তের যে প্রসঙ্গ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ ভুল। কোনও রকম সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়নি।’’ আবার মুখ্যমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা নরেশ চৌহানও দাবি করেছেন, সিআইডি তদন্তের কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। বিষয়টিকে অন্য মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ নরেশের।
রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক তথা দলের মুখপাত্র রণধীর শর্মার কটাক্ষ, এই ঘটনাই প্রমাণ করে দিচ্ছে যে, রাজ্যের প্রশাসনিক ছবিটা কেমন।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২১ অক্টোবর। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু গিয়েছিলেন সিআইডির সদর দফতরে। সেখানে সাইবার শাখার উদ্বোধন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য কিছু জলখাবারের ব্যবস্থাও করা হয়। তাই তাঁর জন্য শিঙাড়া এবং কেকের আয়োজন করা হয়েছিল। একটি বিলাসবহুল হোটেল থেকে সেই জলখাবার আনানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই জলখাবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তো পৌঁছয়ইনি, বরং তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মধ্যে সেই জলখাবার ভাগ করে দেওয়া হয়। কী ভাবে এই ভুল হল? কোথায় গাফিলতি ছিল? মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আনা শিঙাড়া আর কেক কেনই বা প্রোটোকল মেনে তাঁর হাতে পৌঁছল না— এ সব নানাবিধ প্রশ্ন উঠতেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।