(বাঁ দিকে উপরে) সৌরভ রাজপুত। (নীচে) সৌরভের স্ত্রী মুস্কান। (ডান দিকে) মুস্কানের মা কবিতা রস্তোগী। ছবি: সংগৃহীত।
জামাই সৌরভকে খুন করার পর সেই খুনের দায় তাঁর বাড়ির লোকের উপরই ঠেলে দিতে চেয়েছিলেন মুস্কান। এমনই দাবি করলেন মুস্কানের মা কবিতা রস্তোগী।
এক সংবাদমাধ্যমে মুস্কানের মা দাবি করেছেন, কোনও খবর না দিয়েই ১৭ মার্চ রাতে বাড়িতে এসে হাজির হয়েছিলেন মুস্কান। তার পর কাউকে কিছু না বলেই আবার বেরিয়ে যান তাঁর কন্যা। কবিতা বলেন, ‘’১৮ মার্চ আবার আমাকে ফোন করে মুস্কান। বলে, মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাই। ওকে ফোন দাও।’’ মেয়ে পিহুর সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথাও বলেন মুস্কান।
কবিতার আরও দাবি, মুস্কানের আওয়াজ শুনে মনে হচ্ছিল কোনও বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে। তখন তিনি মুস্কানকে জিজ্ঞাসা করেন কিছু হয়েছে কি না। জামাই সৌরভের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো ঝামেলা হত। তার পর আবার মিটেও যেত। কবিতা বলেন, ‘‘জানতাম, ওদের মধ্যে মাঝেমধ্যেই মনোমানিল্য হত। তাই ওদের বিষয়ে নাক গলাতাম না।’’ ১৮ মার্চ ফোন করে কথা বলার সময় খুব কাঁদছিলেন মুস্কান। এমনও দাবি করেছেন কবিতা। তখন তাঁকে বাড়িতে আসতে বলেন। কী হয়েছে সেটা খুলে বলার জন্য বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেন।
ওই দিন বিকেলে আবার বাপের বাড়িতে আসেন মুস্কান। বাড়িতে আসার পর তাঁকে কবিতা জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘জামাই কোথায়, ও কেন এল না? মেয়ের সঙ্গে কি দেখা করবে না? এ কথা শোনার পরই হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলে, সৌরভ আর বেঁচে নেই, মা। আমি জিজ্ঞাসা করি, কেন কী হয়েছে? তখন মুস্কান বলে, ওর বাড়ির লোকেরা ওকে মেরে ফেলেছে।’’ কবিতার দাবি, ‘‘মুস্কান আমাকে আরও বলে, সৌরভ আমাকে ডিভোর্স দেয়নি বলে ওকে খুন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।’’ কিন্তু এই ঘটনা যদি ঘটেই থাকে তা হলে এত দিন তাঁকে জানাননি কেন, মুস্কানকে এই প্রশ্ন করেন কবিতা। তিনি বলেন, ‘‘মুস্কানকে বলি, ১৫ দিন ধরে তো একসঙ্গে হিমাচলে ছিলিস, আশপাশে কোনও লোক ছিল না? কী ভাবে ওরা তোর সামনে সৌরভকে খুন করতে পারল? আর সেই সব দেখে তুই চুপ রইলি? তুই তো এত সরল মেয়ে না, তা হলে?’’
মুস্কানের এই কথাগুলি বিশ্বাস করতে চাননি বলেই দাবি কবিতার। কোথাও যেন তাঁর মনে একটা সন্দেহ তৈরি হচ্ছিল। কবিতার দাবি, মুস্কান যে ধরনের মেয়ে, চোখের সামনে নিজের স্বামীকে খুন হতে দেখে চুপ করে বসে থাকবে না। তা হলে? মুস্কানকে তিনি জানান, যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, তাঁকে নিয়ে টানাটানি হবেই। থানা, পুলিশ হবেই।
কবিতা জানান, মুস্কান ওঁর বাবাকে খুব মান্য করে। ওঁর কথা শোনে। তাই শেষমেশ ওঁর বাবাকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেন তিনি। মুস্কানের বাবা সত্যি ঘটনা বলার জন্য তাঁকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁকে আশ্বাস দেন, কোনও ভুল করলে তাঁর পাশে থাকবেন। আর ঠিক তখনই পুরো ঘটনাটি গড়গড় করে খোলসা করেন মুস্কান। কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে বলেন, ‘‘সৌরভকে খুন করেছি আমরা। আমি আর সাহিল।’’ কী ভাবে, কোথায় কখন খুন করেছেন, সব কথা মুস্কান স্বীকার করেন বলে দাবি কবিতার। তার পরই তাঁকে পুলিশের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনা শোনার পর কবিতা বলেন, ‘‘ওর মতো মেয়ের বেঁচে থাকার কোনও অধিকার নেই। সৌরভ আমার ছেলের মতো। সৌরভ যাতে বিচার পায়, তার চেষ্টা করব।’’