এনআইটি ক্যাম্পাস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত অধ্যাপককে। প্রতীকী ছবি।
অসমে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি-র (এনআইটি) অধ্যাপকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে নিজের কেবিনে ডেকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল। শুক্রবার ওই অধ্যাপককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অসমের শিলচর এনআইটির ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জোরালো হতে শুরু করেছে। রাতভর প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চালান পড়ুয়ারা।
কাছাড়ের পুলিশ সুপার নুমাল মহত্ব জানিয়েছেন, অভিযুক্ত এনআইটির সহকারী অধ্যাপক। নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার অভিযুক্ত অধ্যাপককে এনআইটি ক্যাম্পাস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত অধ্যাপককে সাসপেন্ড করেছেন এনআইটি কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘অভিযুক্ত অধ্যাপক পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কোয়ার্টারে তালা দিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মোবাইল ফোনের অবস্থান চিহ্নিত করে বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ এনআইটি ক্যাম্পাস থেকে প্রথমে আটক করা হয়। পরে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক। নির্যাতিতার অভিযোগ, অধ্যাপক তাঁকে নিজের চেম্বারে ডাকেন। কেন পরীক্ষায় নম্বর কম হয়েছে, প্রথমে এই বিষয়ে দু’-এক কথা জিজ্ঞাসা করেন। তার পরই তাঁকে আপত্তিজনক ভাবে ছোঁয়া শুরু করেন। পুলিশ এবং এনআইটি কর্তৃপক্ষকে নির্যাতিতা যে চিঠি লিখেছেন সেখানে তিনি অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘আমাকে প্রথমে তাঁর পাশে বসান অধ্যাপক। নম্বর কেন কম পেয়েছি তা জিজ্ঞাসা করেন। তার পর আমার হাত ধরেন। আঙুল ছুঁতে থাকেন। তার পর আচমকাই আমার ঊরুতে হাত দেন। সামনে থাকা কম্পিউটারে অশ্লীল গান চালিয়ে দেন। তার পর আমার পেটে হাত দেন। ভয়ে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরেও থামেননি অধ্যাপক।’’ নির্যাতিতা আরও লিখেছেন, ‘‘আমাকে শান্ত হতে বলেন। তার পর পিছন থেকে আমার ঘাড় চেপে ধরেন।’’
নির্যাতিতার দাবি, চেম্বারের বাইরে তখন তাঁর এক সহপাঠী অপেক্ষা করছিলেন। ফিরছিলেন না দেখে ওই সহপাঠী তাঁকে ফোন করেন। তার পরই কোনও রকমে পালিয়ে বাইরে চলে আসেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে যায় এনআইটি ক্যাম্পাসে। রেজিস্ট্রার অসীম রায় জানিয়েছেন, যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেই চেম্বার সিল করে দেওয়া হয়েছে। নির্যাতিতার পাশে আছে এনআইটি। তাঁকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনার তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে এআইটির অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিকে।