Serial Killer Of Bihar

হলদিয়ায় সৎমা, সৎবোনদের খুন, মুম্বইয়ে হত্যা বন্ধুকে! ১৭ বছর পর পাকড়াও বিহারের ‘সিরিয়াল কিলার’

১৭ বছর ধরে পালিয়ে বেড়িয়েছেন পাঁচ খুনে অভিযুক্ত নিরঞ্জন কুমার। অবশেষে বেঙ্গালুরু থেকে তাঁকে পাকড়াও করেছে মুম্বই পুলিশ। হাজির করানো হচ্ছে আদালতে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ১০:২৩
ধৃত নিরঞ্জন কুমার।

ধৃত নিরঞ্জন কুমার। ছবি: সংগৃহীত।

বয়স চল্লিশের কোঠায়। ১৭ বছর ধরে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কখনও রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ নিয়েছেন, কখনও কলের মিস্ত্রি তো কখনও নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেছেন। অবশেষে কর্নাটক থেকে গ্রেফতার করা হল বিহারের ওই ‘সিরিয়াল কিলার’কে। অভিযোগ, সৎমা, সৎভাইবোনদের খুন করে পালিয়েছিলেন নিরঞ্জন কুমার। তার পর যেখানে গিয়ে ঘাঁটি গাড়েন, সেই মুম্বইয়ে খুন করেন এক বন্ধুকে। কিন্তু এত দিন তাঁকে নাগালে পায়নি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বেঙ্গালুরু থেকে নিরঞ্জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিরঞ্জন আদতে বিহারের বাসিন্দা। সরণ জেলায় বাড়ি ছিল তাঁর। ছোটবেলা মাকে হারিয়েছিলেন। বাবা আবার বিয়ে করেন। বাবার কাজের সূত্রে একসময় এ রাজ্যের হলদিয়ায় ছিলেন অভিযুক্ত। সেখানে সৎমা, দুই সৎবোন এবং এক সৎভাইকে নিরঞ্জন খুন করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০২ সালের ঘটনা সেটা। ধৃত স্বীকার করেছেন খুনের কথা। তিনি জানিয়েছেন, বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পরে সংসারে তিনি কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। সৎমা তাঁকে নির্যাতন করতেন। তাই একদিন সৎমাকে খুন করেন। সে দিনই ছয়-সাত বছরের দুই সৎবোনকে খুন করেছিলেন। মেরে ফেলেন ২ বছরের সৎভাইকে। ছেলের বিরুদ্ধে হলদিয়ার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাবা। কিন্তু অভিযুক্তের খোঁজ মেলেনি। তিনি তখন পালিয়েছেন মহারাষ্ট্রে। প্রথমে থাকতেন মুম্বইয়ে। তার পরে ঠিকানা ভাসাই।

ভাসাইয়ে থাকতে থাকতে একটি কাজ জোগাড় করেন নিরঞ্জন। সেখানে তাঁর বন্ধু ছিলেন মনোজ শাহ। মনোজের মাধ্যমেই কাজ পান। থাকার জায়গা হয়। কিন্তু সামান্য বচসায় সেই বন্ধুকেই খুন করেন নিরঞ্জন। পুলিশ সূত্রে খবর, দেওয়ালে ঠুকে ঠুকে মনোজকে খুন করেন নিরঞ্জন। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। আবার পালান নিরঞ্জন।

পাঁচ খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের খোঁজে বিহারে একাধিক বার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। নিরঞ্জনের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এক-দু’বার তাঁরা তাকে বাড়ি যেতে দেখেছেন। কিন্তু কারও সঙ্গে কথাবার্তা বিশেষ বলেননি। কোথায় থাকেন কেউ জানেন না। হাল ছাড়েনি পুলিশও।

অবশেষে নিরঞ্জনকে বেঙ্গালুরু থেকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, সেখানে তিনি কলের মিস্ত্রির কাজ করতেন। থাকতেন একটি ঝুপড়িতে। বার বার নাম বদলেছেন। কোথাও নিরঞ্জনকে পরিচিতরা চেনেন রাজু নামে, কোথাও তিনি অজয়, কোথাও বিজয় শুক্ল তো কোথাও তাঁর নাম রঞ্জন। এক মহিলার সঙ্গে থাকতেন। বছর কয়েক আগে তাঁকেই বিয়ে করেন নিরঞ্জন। আপাতত মুম্বই পুলিশের হেফাজতে তিনি। শীঘ্রই ভাসাইয়ের আদালতে হাজির করানো হবে তাঁকে।

Advertisement
আরও পড়ুন