রায় দেওয়ার সময় গরু নিয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ পর্যবেক্ষণ। — ফাইল ছবি।
দেশে গরু বাঁচানো দরকার কেন, তা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করল গুজরাতের তাপি জেলার একটি নিম্ন আদালত। জানিয়ে দিল, বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে গরুর গোবর বাড়িতে লেপা থাকলে তা পরমাণু বিকিরণ প্রতিরোধ করতে সম্ভব। পাশাপাশি তাপি জেলার আদালতের বিচারক সমীর ব্যাসের পর্যবেক্ষণ, গরুর প্রস্রাব বহু জটিল রোগ সারাতে সক্ষম।
মামলাটি ছিল, ২২ বছর বয়সি এক যুবকের বিরুদ্ধে। তিনি গুজরাত থেকে ‘বেআইনি’ ভাবে গরু এবং বলদ নিয়ে মহারাষ্ট্রে পৌঁছে দিতেন। তাঁকে এই কাজের জন্য যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়েছে তাপি জেলার ওই আদালত। সেখানেই সাজা ঘোষণা করতে গিয়ে গরু নিয়ে এমন মন্তব্য করেন বিচারক সমীর ব্যাস। রায় লিখতে গিয়ে বিচারক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন গো নিধন নিয়েও। লিখেছেন, ‘‘গরু স্রেফ একটি পশু নয়, গরু আমাদের মা।’’
রায়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘পৃথিবীর সমস্ত সমস্যা মিটে যাবে যে দিন গরুর গা থেকে এক ফোঁটা রক্তও মাটিতে পড়বে না। আমরা গোরক্ষার কথা বলি ঠিকই, কিন্তু বাস্তবে তার কোনও প্রতিফলন নেই। গো নিধন এবং বেআইনি গো পরিবহণ রোজ চলছে। এটা সভ্য সমাজের কাছে অত্যন্ত লজ্জার।’’
বিচারক জানিয়েছিলেন, ৭৫ বছর হয়ে গিয়েছে ভারত স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু গো নিধনের ঘটনা কমার বদলে ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘গরু একটি ধর্মীয় প্রতীক। গো সম্পদের উপর নির্ভর করে যে সমস্ত কৃষিজ ফলন হয়, তা আমাদের বহু রোগব্যাধি থেকে রক্ষা করে। বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে, গরুর গোবর লেপা থাকলে সেই বাড়ি পারমাণবিক বিকিরণ থেকেও সুরক্ষিত থাকে। গরুর প্রস্রাবে বহু জটিল দুরারোগ্য রোগও সেরে যায়।’’ গরুর প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে তিনি বেশ কিছু সংস্কৃত শ্লোকও উদ্ধৃত করেন।
২০২০-এর অগস্টে তাপি জেলার পুলিশ মহম্মদ আমিন অঞ্জুম নামে ২০ বছর বয়সিকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গুজরাত থেকে মহারাষ্ট্রে বেআইনি ভাবে গরু ও বলদ নিয়ে যেতেন। গুজরাতের তাপি জেলার নিম্ন আদালতে সেই বিচারপর্ব চলে। শেষে তাঁকে যাবজ্জীবনের সাজা শোনান বিচারক সমীর ব্যাস। সেই মামলারই রায় দিতে গিয়ে গরু নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন বিচারক।