গুজরাতের সুরেন্দ্রনগরে বিজেপির সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
গুজরাতে বিধানসভা ভোটের প্রচারে এ বার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার সুরেন্দ্র নগরে বিজেপির সভায় মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেসের অহংকার এখনও যায়নি। তাই ওরা আমার ক্ষমতা নিয়ে খোঁচা দিচ্ছে।’’ পাশাপাশি, নর্মদা বাঁধ নির্মাণ বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী ‘উন্নয়ন বিরোধী’ মেধা পাটকরকে কেন রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রায় দেখা যাচ্ছে, সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
কংগ্রেস নেতা রাহুল রবিবার ভারত জোড়ো যাত্রায় বলেছিলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর কত ক্ষমতা বিধানসভা ভোটে গুজরাতের মানুষ তা বুঝিয়ে দেবেন।’’ সেই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করে রাজনীতির লড়াইকে সোমবার ‘ব্যক্তিগত পরিসরে’ নিয়ে যেতে চেয়েছেন মোদী। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে অতীতে বিভিন্ন ভোটে বারে বারেই এই কৌশল নিয়ে সফল হয়েছেন তিনি। তাই এ বারেও সেই পথই বেছে নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গুজরাতে পা রেখে গোধরা পরবর্তী দাঙ্গার প্রসঙ্গ তুলে মোদীকে ‘মওত কা সওদাগর’ বলেছিলেন সনিয়া গান্ধী। সেই ওই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে ভোটের হাওয়া ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন মোদী। দাবি করেছিলেন, তাঁকে অপমান করে আসলে গুজরাতকে অপমান করেছেন সনিয়া। মোদী সেই অভিযোগ সফল ভাবে গুজরাতে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারে মোদী ধারাবাহিক ভাবে নেহরু-গান্ধী পরিবারকে নিশানা করায় প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বলেছিলেন, ‘‘মানুষ নীচ-রাজনীতির জবাব দেবেন।’’ প্রিয়ঙ্কার ওই মন্তব্যের সূত্র ধরে মোদী অভিযোগ করেন, তিনি নিচু (অনগ্রসর) জাতির মানুষ বলেই তাঁর রাজনীতিকে আক্রমণ করছেন তথাকথিত উঁচু জাতিভুক্ত রাজনীতিকরা।
এ বার বিধানসভা ভোটের গোড়া থেকেই গুজরাতের কংগ্রেস নেতৃত্ব কৌশল নিয়েছেন, মোদীকে এমন সুযোগ না দেওয়ার। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা বিধানসভা ভোটে নাদিয়াড় কেন্দ্রের প্রার্থী ধ্রুব পটেল সরাসরি মোদীকে ‘ঘরের ছেলে’ বলে বর্ণনা করে রবিবার বলেছেন, ‘‘ঘরের ছেলে যদি দুষ্টুমি করে, তবু কি আমরা তা বাইরে বলতে পারি?’’ এক ধাপ এগিয়ে ভাব আসনের কংগ্রেস প্রার্থী জেনিবেন ঠাকোর প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘গুজরাতের গর্ব’ বলেছেন।
গুজরাতের এক কংগ্রেস নেতা সম্প্রতি বলেন, ‘‘নিজের বিরুদ্ধে আক্রমণকে কী ভাবে পাল্টা আক্রমণের হাতিয়ার করে তোলা যায়, সেটা বারবারই করে দেখিয়েছেন মোদী। তাঁর মতো ধুরন্ধর রাজনীতিককে এ বার আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না।’’ এই পরিস্থিতিতে রাহুলের মন্তব্য মোদীকে সেই ‘সুযোগ’ তৈরি করে দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।