গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দাদা-বোনের রাজনীতির লড়াইয়ের নতুন দৃশ্য দেখল অন্ধ্রপ্রদেশ। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগন্মোহন রেড্ডির বোন তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভানেত্রী শর্মিলা বুধবার গৃহবন্দি হওয়ার আশঙ্কায় রাতভর কাটালেন বিজয়ওয়াড়ায় প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে। সেখানে মেঝেতেই বিছানা পেতে শুতে হয় তাঁকে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সূত্রে প্রাপ্ত সেই দৃশ্যের একটি ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে!
জগনের নেতৃত্বাধীন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শুক্রবার সচিবালয় ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছেন শর্মিলা। তা ঠেকানোর জন্য অন্ধ্র পুলিশ আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁকে গৃহবন্দি করতে পারে বলে অন্ধ্রের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডির কন্যার আশঙ্কা। সে কারণেই তিনি বুধবার বিজয়ওয়াড়ার কংগ্রেস ভবনে রাত্রিবাসের সিদ্ধান্ত নেন বলে দলীয় সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, গত ৪ জানুয়ারিতে শর্মিলা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর দল ওয়াইএসআর তেলঙ্গানা পার্টিও মিশে গিয়েছিল সনিয়া ও রাহুল গান্ধীর দলে। এর পরেই তাঁকে অন্ধ্রপ্রদেশ কংগ্রেসের সভানেত্রীর দায়িত্ব দেয় হাইকমান্ড। কয়েক মাস পরে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্ধ্রপ্রদেশে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। সেখানে এ বার দাদা-বোনের লড়াই দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন অখণ্ড অন্ধ্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা রাজশেখর রেড্ডি। তাঁর মৃত্যুতে খালি হওয়া কাড়াপা জেলার পুলিভেন্ডুলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জেতেন বিজয়াম্মা। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে ২০১১ সালে নয়া দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস গড়েন রাজশেখর-পুত্র জগন। সে সময় পাশে পেয়েছিলেন মা বিজয়াম্মা এবং বোন শর্মিলাকে। পরে জগনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে দু’জনের।
জগনের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে শর্মিলা ২০২১ সালে ওয়াইএসআর কংগ্রেস ছেড়ে প্রয়াত বাবার নামে নতুন দল গড়েছিলেন। জগন-শর্মিলার মা বিজয়াম্মাও পরে সেই দলে শামিল হন। শর্মিলা শিবিরের দাবি ছিল, হায়দরাবাদ নিবাসী প্রয়াত রাজশেখর রেড্ডির কন্যা অন্ধ্রপ্রদেশের তুলনায় তেলঙ্গানার স্বার্থরক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিতে চান। তাই নতুন দল গড়েছেন তিনি। তবে শর্মিলাকে নিয়ে তেলঙ্গানা কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের আপত্তি ছিল বলে দলের একটি অংশ জানাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাই তাঁকে দাদার বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক লড়াই’ লড়তে অন্ধ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গের।