ট্র্যাক্টর মিছিলে গিয়ে অনেকেই নিখোঁজ বলে অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।
রাজধানীতে ট্র্যাক্টর মিছিলে গিয়েছিলেন ওঁরা। ২৬ জানুয়ারি থেকে খোঁজ মিলছে না তেমনই ২১ জন কৃষকের। কৃষক সংগঠন সংযুক্ত কিসান মোর্চার (এসকেএম) এমনটাই অভিযোগ। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১২৫ জন কৃষকের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ মামলা দায়ের করেছে বলেও জানিয়েছে তারা।
ট্র্যাক্টর মিছিলের পর থেকে জেলে রয়েছেন যাঁরা, দিল্লি সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত তেমন ১১৫ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ২১ জনের কোনও খোঁজ নেই বলে দাবি আন্দোলনে শামিল কৃষক ইউনিয়নগুলির। এ ব্যাপারে তাদের সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার।
বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলনে আগেই সমর্থন জুগিয়েছিল কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ)। বৃহস্পতিবার কৃষক সংগঠনগুলির অভিযোগ নিয়ে কেজরীবাল বলেন, ‘‘নিখোঁজ কৃষকদের খোঁজ পেতে কৃষক সংগঠনগুলি দিল্লি সরকারের দ্বারস্থ হয়েছে। আমাকেও অনুরোধ জানিয়েছেন অনেকে। পরিবারের সদস্য বা নিজের ছেলেমেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পারে কতটা যন্ত্রণা বুঝতে পারছি। ২৬ জানুয়ারির দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় অনেকে জেলবন্দি রয়েছেন। নিখোঁজদের খুঁজে বার করা, পরিবারকে তাঁদের হাল হকিকত সম্পর্কে জানানো সরকারের কর্তব্য। নিখোঁজদের খুঁজে বার করতে চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখছি না আমরা।’’ এ ব্যাপারে উপ রাজ্যপাল অনিল বৈজলের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন কেজরীবাল।
নিখোঁজদের খোঁজ পেতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কৃষক সংগঠনগুলিও। দিল্লি সীমানা সংলগ্ন এলাকায় আইনি সহায়তা বিভাগ খোলা হয়েছে। যাঁরা এখনও বাড়ি ফেরেননি, সেখানে এসেই অভিযোগ জানাচ্ছেন তাঁদের পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবারই এ নিয়ে কেজরীবালের সঙ্গে দেখা করেন কৃষক নেতারা। নিখোঁজদের নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান তাঁরা। জেলবন্দি রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষা করানোর আর্জিও জানানো হয়েছে।
এসকেএম-এর তরফে একটি বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়। সেখানে অবিলম্বে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিরোধীস্বরকে দমানোর চেষ্টা করছে সরকার। আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশাপাশি সাংবাদিক এবং স্থানীয়দেরও হেনস্থা করা হচ্ছে। ইন্টারনেট পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোয় পড়ুয়ারা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছেন না। এক দিকে সরকার ডিজিটাল ইন্ডিয়া নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে, অন্য দিকে তারাই আবার ইন্টারনেট পরিষেবার মতো মৌলিক অধিকার থেকে দেশকে বঞ্চিত করছে’।
দেশের অন্দরে তো বটেই অন্য দেশ থেকেও ইতিমধ্যেই কৃষকদের পক্ষে সমর্থন আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন বিরোধী দলও তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে তাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বলে জানিয়েছে এসকেএম। সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল এবং নেতাদের সমর্থন পেয়ে খুশি তারা। কিন্তু সংগঠনের মঞ্চ ব্যবহার করে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না কাউকে।
শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি দেশ জুড়ে পথ অবরোধ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন কৃষকরা। দুপুর ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে রাস্তায় বেরোতে নিষেধ করেছেন তাঁরা। তবে পথ অবরোধ করলেও গর্ভবতী মহিলা, অ্যাম্বুল্যান্স, মুমূর্ষু রোগী এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কোনও গাড়ির পথ আটকানো হবে না বলে জানিয়েছেন হরিয়ানা কিসান সভার সহ-সভাপতি ইন্দ্রজিৎ সিংহ।