মহুয়া খেয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হাতির পাল। —ফাইল ছবি
মহুয়া সংগ্রহ করতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু গিয়ে দেখলেন, আগে থেকেই মহুয়ার গন্ধে জঙ্গলে হাজির হাতির পাল। তারা সমস্ত মহুয়া খেয়ে ফেলেছে। শুধু তা-ই নয়, মহুয়া খেয়ে নেশাগ্রস্ত হাতিরা নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়েছে। তাদের সেই ঘুম ভাঙাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হল গ্রামবাসী এবং বনকর্মীদের।
ঘটনাটি ওড়িশার। কেওনঝাড়ের শিলিপদ জঙ্গলে ঢুকেছিল ২৪টি হাতির একটি দল। সেই জঙ্গলে মহুয়া সংগ্রহ করতে গিয়ে গ্রামবাসীরা দেখেন, হাতিগুলি জঙ্গলে শুয়ে আছে। গভীর ঘুমে তারা প্রত্যেকে আচ্ছন্ন। তাদের সামনে মহুয়া ডোবানো জলের পাত্র রাখা আছে। গ্রামবাসীরাই গাছ থেকে মহুয়া তুলে বড় বড় পাত্রে জলে ডুবিয়ে রেখে গিয়েছিলেন। সেই সব খেয়ে ফেলেছে হাতির পাল। মহুয়া খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে জঙ্গলেই।
স্থানীয় এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘ভোর ৬টা নাগাদ আমরা জঙ্গলে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি, মহুয়া রাখা সমস্ত পাত্র ভেঙেচুরে গিয়েছে। এক ফোঁটা জলও আর নেই। হাতিগুলি সেখানেই শুয়ে ঘুমোচ্ছিল। ওরা সম্ভবত মহুয়া ভেজানো জল খেয়ে ফেলেছে, আর মত্ত হয়ে পড়েছে।’’
হাতির ওই পালে ৯টি দাঁতাল পুরুষ হাতি ছিল। তা ছাড়া ছিল ৬টি স্ত্রী হাতি এবং ৯টি বাচ্চা হাতি। সকলেই পেট ভরে মহুয়া খেয়ে ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
প্রথমে হাতিদের ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করেন গ্রামবাসীরাই। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। পরে বন দফতরে খবর দেওয়া হয়। বনকর্মীরা এসেও মত্ত হাতিদের ঘুম সহজে ভাঙাতে পারেননি। রীতিমতো ড্রাম বাজিয়ে তাদের জাগাতে হয়েছে। ঘুম ভাঙার পর হাতির পাল হেলতে-দুলতে আবার জঙ্গলের গভীরে ফিরে যায়।
ভোরবেলা থেকে হাতিদের ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। অবশেষে বেলা ১০টা নাগার তাদের ঘুম ভাঙে। তবে বন দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মহুয়া খেয়েই যে হাতিগুলি ঘুমিয়ে পড়েছিল, এমনটা না-ও হতে পারে। হয়তো এমনিই ওই হাতির পাল জঙ্গলে বিশ্রাম নিতে এসেছিল। তবে গ্রামবাসীদের দাবি মহুয়া খেয়েই মত্ত হয়ে পড়েছিল দাঁতালরা। মহুয়ার পাত্রগুলিও তারাই ভাঙচুর করেছে।