বদলাপুর-কাণ্ডে চলছে প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।
বদলাপুরে দুই খুদে শিক্ষার্থীকে স্কুলপ্রাঙ্গণে যৌন হেনস্থার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই মুছে ফেলা হয়েছে স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ। অন্তত ১৫ দিনের ফুটেজ মিলছে না। সোমবার এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন সে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেসরকর।
মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে নার্সারির দুই ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠার পরেই স্কুলগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করতে তৎপর হয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। সোমবার শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেছেন, ঘটনার পর থেকেই নাকি গায়েব ওই স্কুলের গত ১৫ দিনের সিসিটিভি ফুটেজ! সেই ফুটেজ কী ভাবে মুছে গেল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এতে স্কুল কর্তৃপক্ষের হাত রয়েছে কি না, তদন্তে দেখা হবে তা-ও। সেই সঙ্গে রাজ্যের স্কুল ও হস্টেলগুলিতে ‘প্যানিক বোতাম’ বসানোর প্রস্তাবও দিয়েছেন দীপক। তিনি বলেছেন, “সিসিটিভি ক্যামেরার মতো প্যানিক বোতামও বসানো যেতে পারে স্কুলগুলিতে। এটি একটি উন্নত প্রযুক্তি।”
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৩ অগস্ট। ওই দিন বদলাপুরের একটি স্কুলে নার্সারির দুই পড়ুয়াকে যৌন নিগ্রহ করে স্কুলেরই এক সাফাইকর্মী। ঘটনার তিন দিন পর, ১৬ অগস্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অভিভাবকেরা। পরিবারের দাবি, থানায় অভিযোগ জানানোর ১১ ঘণ্টা পর এফআইআর দায়ের হয়েছিল। ওই ঘটনায় ১৭ তারিখেই অভিযু্ক্তকে গ্রেফতার করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। আপাতত অভিযুক্ত রয়েছে পুলিশি হেফাজতেই।
ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই উত্তাল বদলাপুর। গত সোমবার সারা দিন রেলস্টেশন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে জনতা। এমনকি শনিবার মহারাষ্ট্র বন্ধেরও ডাক দেওয়া হয়েছিল। বিক্ষোভের জেরে নড়চড়ে বসেছে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। বদলাপুর-কাণ্ডে তদন্তের স্বার্থে ইতিমধ্যেই বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছে। তারাই জানিয়েছে, বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথম জানতে পারেন ১৪ তারিখ। অথচ ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। সিটের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে নাম রয়েছে স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা, শিক্ষিকা এবং দুই পরিচারিকার। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফেও তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও, আগামী এক মাসের মধ্যে রাজ্যের সব স্কুলে বসছে সিসিটিভি ক্যামেরা। বুধবার একটি সরকারি নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, অবিলম্বে নজরদারি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ না মানলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। এমনকি স্কুল চালানোর অনুমতিও বাতিল করে দেওয়া হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রক।