Editors Guild of India

তথ্য যাচাইয়ের নামে খবর সম্প্রচারের উপর খবরদারি চালাতে চায় সরকার! উদ্বিগ্ন এডিটর্স গিল্ড

সত্য-মিথ্যা নিরূপণের প্রশ্নে তাদের ক্ষমতা কতটা একচেটিয়া হবে? এমন ক্ষেত্রে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আবেদনের সুযোগ আদৌ কতটা থাকছে?

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:০০
Social media

সরকার সমাজমাধ্যমে খবর সম্প্রচারের উপরে খবরদারি চালাতে চায় বলে উদ্বেগ প্রকাশ করল এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়া। প্রতীকী ছবি।

স্বনিযুক্ত তথ্য-যাচাই ইউনিটের মাধ্যমে সরকার সমাজমাধ্যমে খবর সম্প্রচারের উপরে খবরদারি চালাতে চায় বলে উদ্বেগ প্রকাশ করল এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়া। শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, বিষয়টি দমনমূলক ও সেন্সরশিপের সমতুল। তবে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর একটি সাক্ষাৎকারে সেই অভিযোগ খারিজ করেছেন।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক গেজেট বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০২১-এ কিছু সংশোধনী প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, সমাজমাধ্যমে ইন্টারনেটে সরকার-সংক্রান্ত ‘জাল, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করা, প্রচার করা বা রাখা’ যাবে না কোনও ভাবেই। সরকারি তথ্য-যাচাই ইউনিট তৈরির কথাও বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। কিন্তু গিল্ডের প্রশ্ন, সেই ইউনিটের পরিচালন-পদ্ধতি কী হবে। সত্য-মিথ্যা নিরূপণের প্রশ্নে তাদের ক্ষমতা কতটা একচেটিয়া হবে? এমন ক্ষেত্রে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আবেদনের সুযোগ আদৌ কতটা থাকছে?

Advertisement

দাবি মতো খবর ও অ্যাকাউন্ট না-সরানোর ঘটনায় বিভিন্ন সমাজমাধ্যম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আকচাআকচিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বার বার অভিযোগ উঠেছে, ‘অপছন্দে’র বিষয়কে ‘মিথ্যা’ বলে দমনের চেষ্টার। আইনে সাম্প্রতিক সংশোধনীর পরে গিল্ডের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘দমনমূলক নিয়ম চাপিয়ে মন্ত্রকের এমন নির্দেশিকা আক্ষেপের বিষয়। আবেদন করা হচ্ছে, সেটি বাতিল করে সম্প্রচার সংস্থা ও সংবাদ-সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হোক।’’ ওই নির্দেশিকায় ‘জাল’, ‘মিথ্যা’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ শব্দগুলি যে-ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে প্রশাসনের তরফ থেকে নিয়মের অপব্যবহারের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ডিজ়িটাল অধিকার রক্ষা সংগঠন ‘ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন’ও।

কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর শুক্রবার এই প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘বহিরাগত কোনও সংস্থার পক্ষে সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত তথ্য যাচাই করাটা কঠিন।’’ মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন বা বাক্-স্বাধীনতা খর্বের আশঙ্কা খারিজ করে তিনি বলেছেন, ‘‘শত্রু দেশের থেকে আমাদের গণতন্ত্রে আঘাত হানতে এমন অনেক প্রচার হয়। আমরা ভারসাম্য রাখছি।’’

মন্ত্রীর দাবি, ‘বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে’ তথ্যের সত্য-মিথ্যা যাচাই করা হবে। সরকারি ইউনিটের শনাক্ত করা ‘ভুয়ো খবর’ মোছার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকবে ইন্টারনেটে সমাজমাধ্যম চালানো সংস্থাগুলিরই। তবে তেমন খবর রেখে দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পথ খোলা থাকছে। জাল খবর ইন্টারনেট দিয়ে সমাজমাধ্যমে সহজেই দ্রুত ছড়াতে পারে বলে মন্ত্রীর বক্তব্য, ইন্টারনেটে সমাজমাধ্যম চালানো সংস্থাগুলির আরও বেশি করে জবাবদিহি করা ও দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুন
Advertisement