ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। —ফাইল চিত্র।
প্রায় নয় একর জমি বেআইনি ভাবে দখল করেছেন হেমন্ত সোরেন। ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ তুলেছে ইডি। ঝাড়খণ্ডের জমি দুর্নীতির সেই মামলায় এ বার কেন্দ্রীয় সংস্থা চার্জশিট জমা দিয়েছে। তাতে অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছে হেমন্তের নাম। সঙ্গে আরও তিন জনের নাম জুড়েছে ইডি। কী ভাবে হেমন্ত জমি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছেন, তার ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে চার্জশিটে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, হেমন্ত ছাড়াও ইডির চার্জশিটে নাম রয়েছে রাজস্ব দফতরের আধিকারিক ভানুপ্রতাপ প্রসাদ এবং আরও দু’জন সরকারি আধিকারিকের। ইডি দাবি করেছে, ‘জমি মাফিয়া’র অন্যতম সদস্য হেমন্ত স্বয়ং। তিনি অপরাধের সুবিধাও ভোগ করেছেন। ইডি জানিয়েছে, তদন্তের সময় তারা ভানুপ্রতাপের অফিস থেকে ৪৪ পাতার একটি ফাইল খুঁজে পেয়েছে। তাতে হেমন্তের জমি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে। ভানুপ্রতাপ হেমন্তকে ‘বস্’ বলে ডাকতেন বলেও চার্জশিটে দাবি করেছে ইডি।
অভিযোগ, ২০১১ সালে রাঁচীর বারগেন এলাকা থেকে ৮.৮৬ একর জমি বেআইনি ভাবে হস্তগত করেন হেমন্ত। এই কাজে তাঁকে সহায়তা করেছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ রঞ্জিৎ সিংহ, হিলারিয়াস কছপ এবং রাজকুমার। ইডি চার্জশিটে আরও জানিয়েছে, ভানুপ্রতাপ বিভিন্ন জমির সরকারি দলিল নয়ছয় করতেন। এতে তাঁকে সাহায্য করতেন সরকারি আধিকারিকেরাই। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন খোদ হেমন্ত।
ইডির জেরার মুখে হেমন্ত দাবি করেছেন, তিনি জমি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানেন না। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত অসহযোগিতা এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মুখ না খোলার অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তারা জানিয়েছে, ৩৩ জন সাক্ষীর বয়ান নিয়ে এবং বহু নথিপত্র সংগ্রহ করে এই চার্জশিট তারা তৈরি করেছে। হেমন্তের দিল্লির বাসভবন থেকে ৩৬ লক্ষ নগদ টাকা এবং একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি আগেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এ বার ইডি বাজেয়াপ্ত করেছে ২৫৬ কোটি টাকার ‘বেআইনি’ সম্পত্তিও।
হেমন্ত প্রথম থেকেই নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি অস্বীকার করেছেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে বিরোধী সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। গত ৩১ জানুয়ারি হেমন্তকে গ্রেফতার করেছে ইডি। গ্রেফতার হওয়ার আগে তিনি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তাঁরই দলের নেতা চম্পই সোরেন।