Chhattisgarh Journalist Murder

আশ্রয় ছিল না, কাজ করেছেন গ্যারাজে, নির্ভীক সাংবাদিকতাই কাল হল ছত্তীসগঢ়ের মুকেশের!

গত ৩ জানুয়ারি বিজাপুরের এক ঠিকাদারের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মুকেশের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় ছত্তীসগঢ়। ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:০৪
সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকরের মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় ছত্তীসগঢ়। ছবি: সংগৃহীত।

সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকরের মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় ছত্তীসগঢ়। ছবি: সংগৃহীত।

নির্ভীক সাংবাদিকতার জন্য অনেকের নজর কেড়েছিলেন তিনি। আবার অনেকের চক্ষুশূলও হয়ে উঠেছিলেন। মুকেশের পরিচিত এবং ঘনিষ্ঠরা বলছেন, ভয়ডর ছিল না তাঁর। বেশ কয়েক বার তাঁর উপর হামলাও হয়। কিন্তু তার পরেও সত্য উদ্ঘাটনের খোঁজে ছুটে গিয়েছেন বার বার। বিজাপুর, বস্তারের অনেক দুর্নীতি এবং অপরাধের পর্দা ফাঁস করেছেন। আর এই নির্ভীক সাংবাদিকতার জন্যও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন মুকেশ।

Advertisement

মুকেশের এক ঘনিষ্ঠের দাবি, সাংবাদিকতায় আসার পর তিনি বলেছিলেন, বস্তারের এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যে গুলি সংবাদমাধ্যমগুলিতে কাটছাঁট করে দেখানো হয়। তাই এলাকার বিভিন্ন পরিস্থিতির ‘আনকাট’ ছবি তুলে ধরতে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেলও খোলেন। নাম দেন ‘বস্তার জংশন’। দেড় লক্ষ গ্রাহক ছিল সেই চ্যানেলের। মুকেশের এক পরিচিতের দাবি, তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের গ্রাহক সংখ্যা যখন হু হু করে বাড়ছিল, সেই সময় দাদা যুকেশকে বলেছিলেন, ‘‘মা যদি বেঁচে থাকলে এই দিন দেখে খুশি হত। অনেক কষ্টের মধ্যে পড়াশোনা করে আজ এই জায়গায় পৌঁছেছি।’’

মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না মুকেশদের। ২০০৫ সালে বিজাপুরে বাসাগুড়া গ্রামে চলে আসেন তাঁরা। সেখানে তখন দশম শ্রেণি পাশ করাই অনেক বড় বিষয় ছিল। অল্প বয়সেই মাকে হারান মুকেশ। তাঁর এক দাদাও রয়েছে। নাম যুকেশ। মায়ের মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন দুই ভাই। মুকেশের এক পরিচিতের দাবি, সংসার টানতে গ্যারাজেও কাজ করতে হয়েছে মুকেশকে। খবু কাছ থেকে এলাকার নানা সমস্যাগুলি দেখার পর সেই ঘটনাগুলিকে প্রকাশ্যে আনতে সাংবাদিকতার পথ বেছে নেন। দাদা যুকেশও পেশায় সাংবাদিক।

স্থানীয় সূত্রের খবর, কোনও নতুন খবর করলেই এলাকার লোকজনদের ডেকে জিজ্ঞাসা করতেন, ঠিক হয়েছে কি না। বিজাপুর এবং বস্তার চিনতেন হাতের তালুর মতো। বছর দুই-তিনেক আগে রাওঘাট প্রকল্প নিয়ে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হন মুকেশ।

গত ৩ জানুয়ারি বিজাপুরের এক ঠিকাদারের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মুকেশের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় ছত্তীসগঢ়। ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই অভিযুক্তদের মধ্যে মুকেশের এক তুতো ভাইও আছেন বলে দাবি পুলিশের। ১২০ কোটি টাকার প্রকল্পের ‘দুর্নীতি’র খবর ফাঁস করেছিলেন মুকেশ। সেই খবরের জেরে কি তাঁকে খুন হতে হল, উঠছে প্রশ্ন।

Advertisement
আরও পড়ুন