বোমা হামলার হুমকি পাওয়ার পর কুকুর নিয়ে দিল্লির এক স্কুলে তল্লাশি অভিযান পুলিশের। —ফাইল চিত্র।
কেউ চেয়েছিল পরীক্ষা স্থগিত হোক, কেউ আবার চেয়েছিল ছুটি দেওয়া হোক স্কুলে। সেই কারণেই নিজের নিজের স্কুলে বোমা হামলার হুমকি দিয়ে ইমেল পাঠিয়েছিল পড়ুয়ারাই! দিল্লির স্কুলে বোমাতঙ্কের ঘটনার তদন্তে এমনই জানাল পুলিশ। অন্তত তিনটি স্কুলের বোমাতঙ্ক ছড়ানোর ঘটনায় দায়ী সেই স্কুলের পড়ুয়ারাই।
মাস কয়েক ধরে দিল্লির বিভিন্ন স্কুলে বোমা হামলার হুমকির ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। শুধু স্কুল নয়, হাসপাতাল, বিমানবন্দরেও একই ভাবে একাধিক বার বোমাতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে, যা নিয়ে নড়েচড়ে বসে দিল্লি পুলিশ। বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লির রোহিনীর একটি স্কুলে গত ২৮ নভেম্বর বোমা হামলার হুমকি দিয়ে ইমেল পাঠানো হয়েছিল। ঠিক তার আগের দিন দিল্লির প্রশান্ত বিহারে একটি মাল্টিপ্লেক্সে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। ওই বিস্ফোরণের সঙ্গে স্কুলের বোমা হামলার হুমকির কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই দুই ঘটনার মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। স্কুলের দুই পড়ুয়াই হুমকিবার্তা পাঠিয়েছিল। তাদের জেরা করে জানা গিয়েছে, দুই পড়ুয়া সম্পর্কে ভাইবোন। দু’জন মিলে পরিকল্পনা করেই ইমেলটি পাঠিয়েছেল। তারা চেয়েছিল স্কুলের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যাক!
জেরায় ওই পড়ুয়ারা স্বীকার করেছে, আগে স্কুলে বোমা হামলার হুমকি এসেছিল জেনেই ওই পরিকল্পনা মাথায় আসে তাদের। সামনেই স্কুলে পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষা যাতে সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়, তাই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছিল। অভিভাবকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে তাদের থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়াও দিল্লির আরও দুই স্কুলে বোমা হামলার হুমকি পাঠানোর নেপথ্যে রয়েছে পড়ুয়ারাই। স্কুলগুলিতে যাতে ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতেই পড়ুয়ারা নিজেদের মধ্যে পরিকল্পনা করে হুমকি ইমেল পাঠিয়েছিল। তাদেরও ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। তবে ভবিষ্যতে যাতে এমন কাণ্ড না-ঘটায়, তা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ দিনে বোমা হুমকির ঘটনায় শুধু রাজধানীতেই শতাধিক স্কুলে বোমাতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) ব্যবহার করে ইমেল পাঠানো হয়েছিল। তাই অভিযুক্তদের শনাক্ত করা কঠিন হয়েছিল তদন্তকারীদের কাছে।