লালকেল্লায় নিশান (বাঁদিকে), অভিযুক্ত দীপ সিধু (ডানদিকে) ছবি: রয়টার্স
যাঁর বিরুদ্ধে দিল্লির প্রতিবাদী কৃষকদের ক্ষেপিয়ে তোলার অভিযোগ, সেই পঞ্জাবি গায়ক-অভিনেতা দীপ সিধু অবশেষে মুখ খুললেন। আত্মপক্ষ সমর্থন করে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এক জনের পক্ষে কি লক্ষ লক্ষ কৃষককে উত্তেজিত করা সম্ভব? আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম মাত্র।’’ নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও প্রকাশ করে বিতর্কের মধ্যেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তিনি।
বিজেপি যোগের কথা উল্লেখ করে কৃষক নেতারা প্রজাতন্ত্র দিবসের সন্ধ্যায় অভিযোগ করেন, দীপ সিধু নামে ওই গায়ক-অভিনেতাই ট্র্যাক্টর মিছিলকে বেপথে চালিত করেছেন। মোদী ঘনিষ্ঠ এই অভিনেতা আন্দোলনের গায়ে কালি ছেটাতে এই পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
তার পরই ফেসবুকে সাফাই দিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেন দীপ সিধু। ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করে বলেন, ‘‘লালকেল্লায় যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। যৌথ সিদ্ধান্তেই সেখানে যাওয়া হয়েছে। ভারতীয় পতাকা নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেটিও ভুয়ো। ওখানে ভারতীয় পতাকার নীচে নিশান সাহিব উড়িয়ে দিয়েছিলেন কৃষকরা। এতে জাতীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়নি।’’ তিনি মনে করেন, সাধারণ মানুষের অধিকার যখন লঙ্ঘিত হয়, দিনের পর দিন প্রশাসন পাত্তা না দিয়ে ফেলে রাখে, তখন এমন রাগ তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। যার পরিণতি এই আন্দোলন।
ছায়াসঙ্গী দীপ সিধু গত ডিসেম্বরে কৃষক আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন অভিনেতা তথা বিজেপি সাংসদ সানি দেওল। কৃষক আন্দোলনের নেতারাও তাঁকে নিয়ে সন্তুষ্ট নন। আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকা স্বরাজ অভিযান দলের নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, ‘‘প্রথম থেকে আন্দোলনকারীরা দীপ সিধুর থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। শাম্বু সীমানায় যখন তিনি প্রথম বার আন্দোলনে যোগ দিতে আসেন, তখন তাঁর দলবদলের কাজকর্ম দেখে প্রতিবাদরত কৃষকরা ওই সঙ্গ থেকে সরে এসেছিলেন।’’
এত কাণ্ডের পরেও গণতান্ত্রিক অধিকারের কথাই ভিডিয়োতে তুলেছেন দীপ সিধু। বলেছেন, ‘‘আমরা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট না করে দিল্লিতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। প্রত্যেকের তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার অনুশীলন করার অনুমতি রয়েছে। আর, এক জনের পক্ষে একক দক্ষতায় এ ভাবে লক্ষ লক্ষ কৃষককে সংগঠিত করা কি সম্ভব?’’