ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’-এর পূর্বাভাস। ছবি: পিক্সাবে।
পুজোর মরসুমে বঙ্গোপসাগরের বুকে বাসা বাঁধছে গভীর নিম্নচাপ। সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে এই গভীর নিম্নচাপই ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিতে পারে এমনটাই পূর্বাভাস মৌসম ভবনের। আসন্ন সামুদ্রিক এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘হামুন’। এই নাম ইরানের দেওয়া। ‘হামুন’ শব্দের অর্থ সমতল ভূমি বা পৃথিবী। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি মধ্য-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে বাঁক নিতে পারে। এখনও পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপের অবস্থান দিঘা থেকে ৫৬০ কিলোমিটার, ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ৪৩০ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের দাবি, উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে থেকে এই নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং বাংলাদেশের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’। খেপুপাড়া এবং চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে ‘হামুন’। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, প্রতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে সেই সময়।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার বিভিন্ন এলাকায়। ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকার মধ্যে পুরী, জগৎসিংহপুর এবং কেন্দ্রাপাড়ায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী তিন দিনে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। সোমবার থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে কলকাতা-সহ পাঁচ জেলায়। নবমীর দিন কলকাতার পাশাপাশি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলি জেলার কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কয়েকটি জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দশমীতে বিসর্জনের দিনেও বৃষ্টিতে ভিজতে পারে দক্ষিণের কয়েকটি জেলা। কলকাতা-সহ হাওড়া এবং হুগলি জেলার কিছু এলাকার পাশাপাশি, উপকূলের কাছাকাছি পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কয়েকটি এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। তা ছাড়া দক্ষিণের অন্য জেলাগুলিতেও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস।
গভীর নিম্নচাপের ফলে বৃষ্টি হতে পারে একাদশীতেও। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণের বিভিন্ন জেলাও হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে পারে। মঙ্গল এবং বুধবার ঝোড়ো হাওয়া এবং গভীর নিম্নচাপের ফলে সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।