বাঁ দিক থেকে, অখিলেশ যাদব এবং ইয়েদুরাপ্পা। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভা ভোটে হিমাচল প্রদেশের পাশাপাশি মঙ্গলবার ‘ক্রস ভোটিং’ হল উত্তরপ্রদেশ এবং কর্নাটকেও। তবে হিমাচলের মতো শাসকদল নয়, ওই দুই রাজ্যে ‘ঘর ভেঙেছে’ বিরোধীদের।
উত্তরপ্রদেশে প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র পাঁচ বিধায়ক বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পরে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে। অন্য দিকে, কর্নাটকে শাসকদল কংগ্রেসের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন প্রভাবশালী বিজেপি বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী এসটি সোমশেখর গৌড়া।
আগামী এপ্রিলে ১৫টি রাজ্যের ৫৬ জন রাজ্যসভার সদস্য অবসর নিতে চলেছেন। উত্তরপ্রদেশের ১০ জন ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ, অন্ধ্রপ্রদেশের তিন, বিহারের ছয়, ছত্তীসগঢ়ের এক, গুজরাতের চার, রাজস্থানের তিন, হরিয়ানার এক, হিমাচল প্রদেশের এক, কর্নাটকের চার, মধ্যপ্রদেশের পাঁচ, মহারাষ্ট্রের ছয়, তেলঙ্গানার তিন, উত্তরাখণ্ডের এক এবং ওড়িশা থেকে তিন জন নির্বাচিত হওয়ার কথা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্য রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের বিধায়ক সংখ্যার অনুপাতে প্রার্থী দিলেও ভোট হচ্ছে উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক এবং হিমাচল প্রদেশে।
উত্তরপ্রদেশে রাজ্যসভার ১০টি আসনে নির্বাচন হয় মঙ্গলবার। সংখ্যার হিসাবে সাতটি আসনে বিজেপি প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের দলের তিন প্রার্থীর জয় চলতি মাসের গোড়া পর্যন্ত নিশ্চিত ছিল। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় লোক দলের এনডিএ-তে যোগদান এবং দু’জন এসপি বিধায়কের প্রকাশ্যে বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থনের ঘোষণার পরে চিত্র পাল্টেছে। বিজেপি প্রথমে সাত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বিরোধী শিবিরের হালচাল দেখে অষ্টম আসনেও প্রার্থী দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অখিলেশের উপর চাপ বাড়িয়ে ‘বাহুবলী’ বিধায়ক রাজা ভাইয়া এবং তাঁর দল জনসত্তা পার্টির এক বিধায়ক বিজেপিকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছেন।
প্রসঙ্গত, বতর্মানে ৪০৩ আসনের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় চারটি আসন খালি। ভোট দিয়েছেন ৩৯৯ জন বিধায়ক। রাজ্যসভায় এক জন প্রার্থীকে জিততে পেতে হবে ৩৭টি ভোট। আট প্রার্থীকে জেতাতে বিজেপির প্রয়োজন ২৯৬টি ভোট। তাঁদের পক্ষে রয়েছে ২৮৬টি ভোট (বিজেপি: ২৫২, আপনা দল: ১৩, নিষাদ দল: ৬, এসবিএসপি: ৬, আরএলডি: ৯)। সব মিলিয়ে ১০টি ভোট কম রয়েছে বিজেপির। রাজ্যসভা ভোটে ক্রস ভোটিংয়ের সম্ভাবনাকে আরও উস্কে দিয়ে মঙ্গলবার সকালে পদত্যাগ করলেন উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় এসপি-র মুখ্যসচেতক মনোজ পাণ্ডে। তিনি এবং আরও চার এসপি বিধায়ক মঙ্গলবার বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেন বলে সূত্রের খবর।
তিন প্রার্থীকে জেতাতে অখিলেশের দলের প্রয়োজন প্রয়োজন ১১১টি ভোট। তাদের বিধায়ক সংখ্যা ১০৮। কিন্তু তার মধ্যে দু’জন জেলবন্দি। এসপির পক্ষে কংগ্রেসের দুই বিধায়ক ও নির্দলের দু’জন প্রার্থী। ফলে তিন প্রার্থীর জেতা নিশ্চিত ছিল এসপি-র। কিন্তু দলের পাঁচ বিধায়ক বিজেপির পক্ষে ভোট দেওয়ায় পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্য দিকে, কর্নাটকে পরিষদীয় পাটিগণিত অনুযায়ী চারটি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের তিনটি এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপির একটিতে জেতার কথা। কিন্তু আর এক বিরোধী দল জেডিএসের সঙ্গে জোট বেঁধে দু’টি আসনে লড়তে নেমেছে পদ্মশিবির। কিন্তু সেখানে ‘ক্রস ভোটিং’ বুমেরাং হতে পারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দলের।