লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
রাহুল গান্ধী কি সংসদে ধাক্কাধাক্কি করেছিলেন? তাঁর ধাক্কার জেরেই কি বিজেপির দুই সাংসদ পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছেন? লোকসভার বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে দায়ের করা বিজেপির এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশ। তদন্তভার দেওয়া হয়েছে অপরাধদমন শাখাকে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় রাহুলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের ডিসিপি (অপরাধ) সঞ্জয়কুমার সইন জানিয়েছেন, অপরাধদমন শাখার ইন্টারস্টেট সেল এই ঘটনার তদন্ত করবে। এসিপি রমেশ লাম্বার নেতৃত্বাধীন দলকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই ঘটনা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র শুক্রবার রাত ৮টার মধ্যে হাতে পেয়ে গিয়েছে অপরাধদমন শাখা। শীঘ্রই তারা তদন্ত শুরু করে দেবে।
সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অম্বেডকর সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার রাহুলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিরোধীরা। সংসদের মকর দ্বারের কাছে বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন, যা ক্রমে হাতাহাতিতে পরিণত হয়। এই সময়ে ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যান বিজেপির বালেশ্বরের সাংসদ প্রতাপ ষড়ঙ্গী এবং ফারুখাবাদের সাংসদ মুকেশ রাজপুত। মাথায় চোট নিয়ে দু’জনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিজেপির অভিযোগ, রাহুলের ধাক্কাতেই দুই সাংসদ পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে বিজেপি। কংগ্রেসও ওই একই থানায় পাল্টা একটি অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিজেপি সাংসদদের ধাক্কায় বর্ষীয়ান নেতা তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে পড়ে গিয়েছেন। তিনি হাঁটুতে চোটও পেয়েছেন। ডিসিপি জানিয়েছেন, কংগ্রেসের অভিযোগটিও খতিয়ে দেখবে অপরাধদমন শাখা।
সংসদে সে দিন ঠিক কী কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখার জন্য সংসদে গিয়ে তদন্ত প্রয়োজন। দিল্লি পুলিশের তরফে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সেই অনুমতি চাওয়া হবে। সংসদে গিয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন পুলিশকর্তারা।
মঙ্গলবার রাজ্যসভায় সংবিধানের ৭৫ বছর নিয়ে বিতর্কের শেষে জবাবি বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘‘এখন একটা ফ্যাশন হয়েছে, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর...। এত বার ভগবানের নাম নিলে সাত জন্ম পর্যন্ত স্বর্গ লাভ হত।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে অম্বেডকরের অনেক মতপার্থক্য ছিল। সেই কারণেই নেহরুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।’’ বুধবার থেকেই শাহের বিরুদ্ধে অম্বেডকর-অবমাননার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার সেই বিক্ষোভ সংঘর্ষের আকার নেয়, যার জল গড়ায় থানাপুলিশ পর্যন্ত।