নিরাপত্তার দায়িত্ব বদলে যাবে ২২ জানুয়ারি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
জানুয়ারি পড়তেই অযোধ্যায় ‘কাউন্টডাউন’ শুরু হয়ে গিয়েছে। ২২ জানুয়ারি নতুন মন্দিরে অধিষ্ঠিত হবেন রামলালা। অস্থায়ী আসন থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিয়ে আসবেন মন্দিরের সিংহাসনে। সেই দিনেই রামলালার রক্ষার দায়িত্বও বদলে যাবে। এত দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী (সিআরপিএফ) ছিল এই দায়িত্বে। নতুন মন্দিরে মূর্তি আসার পর সেই নিরাপত্তা দেখবে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য পুলিশ।
দীর্ঘ সময় ধরে বিতর্ক চলায় স্পর্শকাতর এলাকা হিসাবেই চিহ্নিত অযোধ্যা। বিশেষ করে যেখানে রামলালার মূর্তি রাখা ছিল সেখানে নিরাপত্তা বলয় ভেঙে পাখিও গলতে পারে না। ভক্তেরা গেলে, তাঁদের সঙ্গে থাকা যাবতীয় কিছু বাইরে রেখে যেতে হত রামলালার অস্থায়ী মন্দির চত্বরে। তার আগে দফায় দফায় তল্লাশি। এর পরে মন্দির পর্যন্ত রাস্তার গোটাটাই লোহার খাঁচা। তার ভিতর দিয়েই যেতে হয়। খাঁচার বাইরে বন্দুকধারীদের কড়া পাহারা। আর মূর্তির সামনে গিয়েও কয়েক মুহূর্তের বেশি দাঁড়ানোর উপায় নেই। প্রণাম সেরে নকুলদানা প্রসাদ নিতে যেটুকু সময়। রীতি মতো কঠিন নিরাপত্তা বলয় পার হয়ে মূর্তি পর্যন্ত যাওয়া এবং ফেরা।
সেই দিনটাও শেষ হতে চলেছে আগামী ২২ জানুয়ারি। অযোধ্যার বিতর্কিত সৌধ রক্ষার দায়িত্ব একটা সময়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতেই ছিল। বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহের সময়েই ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বিতর্কিত সৌধ ভেঙে ফেলে মন্দিরপন্থীদের করসেবকেরা। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়। দীর্ঘ ৩০ বছর সেই দায়িত্ব পালন করে আসছে সিআরপিএফ। এ বার তার সমাপ্তি।
২২ জানুয়ারি নতুন মন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠার পরেই নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। তবে নিরাপত্তা নিয়ে খুব একটা নরম হবে না উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। দায়িত্বপ্রাপ্ত এসএসএফ-কে বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে মন্দিরের নিরাপত্তা রাজ্য পুলিশের হাতে গেলেও আপাতত কিছু দিন মন্দির চত্বরে কেন্দ্রীয় বাহিনী থেকে যাওয়ার কথা। সেটা কত দিন চলবে তা নিয়ে এখনও কোনও দিনক্ষণ স্থির হয়নি বলেই জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এক কর্তা।
তবে দীর্ঘ দায়িত্বপালনের সময়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে হয়েছিল সিআরপিএফ-কে। ২০০৫ সালের ৫ জুলাই জঙ্গি হানায় প্রাণ গিয়েছিল বাহিনীর তিন জওয়ানের। তবে তার আগেই রামলালার অস্থায়ী মন্দিরে হামলা চালাতে আসা লস্কর-ই-তইবার পাঁচ জঙ্গিকে খতম করে সিআরপিএফ। তবে গ্রেনেড হামলায় জখম এক সাধারণ মানুষেরও মৃত্যু হয়।