সারা ভারত জুড়ে ফিল্মজগতের সফল অভিনেতাদের তালিকায় রয়েছে রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান, প্রভাস এবং সলমন খান-সহ বহু তারকার নাম। কিন্তু ফিল্মজগতের ইতিহাসে এমন এক অভিনেতা রয়েছেন যাঁর কেরিয়ারের ঝুলিতে রয়েছে ৪০০টি হিট ছবি।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, অমিতাভ-সহ বলিপাড়ার তিন খান— শাহরুখ খান, সলমন খান এবং আমির খানের কেরিয়ারের হিট ছবির সংখ্যার সঙ্গে রজনীকান্ত এবং প্রভাসের মতো জনপ্রিয় তারকার কেরিয়ারের হিট ছবির সংখ্যা যোগ করলেও তা ৪০০-র গণ্ডি পার করে না। ৪০০টি হিট ছবি দর্শককে উপহার দিয়ে ফিল্মজগতে নজির গড়ে তুলেছেন যে অভিনেতা তাঁর নাম প্রেম নাজ়ির।
পঞ্চাশ থেকে আশির দশকে মালয়ালম ফিল্মজগতের জনপ্রিয় তারকা ছিলেন প্রেম। ১৯২৬ সালে কেরলে জন্ম প্রেমের। জন্মের সময় তাঁর নাম ছিল আব্দুল খাদের। পেশার খাতিরে নিজের নাম পরিবর্তন করে প্রেম নাজ়ির রাখেন তিনি।
শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল প্রেমের। পড়াশোনার পাশাপাশি থিয়েটারে অভিনয় করা শুরু করেন প্রেম।
পঞ্চাশের দশকে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন প্রেম। ১৯৫২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মারুমাকাল’ নামের একটি তেলুগু ছবির মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন তিনি।
কেরিয়ারের দ্বিতীয় ছবি ‘বিসাপপিন্তে ভিলি’র মাধ্যমে দক্ষিণী ফিল্মজগতে পরিচিতি পান প্রেম। রোম্যান্টিক ঘরানার ছবি থেকে শুরু করে পৌরাণিক ঘরানার ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
ষাট থেকে সত্তরের দশকে মালয়ালম ফিল্মজগতের একমাত্র সুপারস্টার হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন প্রেম। কেরিয়ারের প্রথম ২০ বছরে ১২টি হিট ছবি দর্শককে উপহার দেন অভিনেতা।
প্রেম তাঁর সম্পূর্ণ কেরিয়ারে মোট ৮০ জন নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেন। ৮০ জন অভিনেত্রীর মধ্যে শীলা সেলিনের সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে প্রেমকে। মোট ১৩০টি ছবিতে শীলার সঙ্গে অভিনয় করেন প্রেম।
পঞ্চাশ থেকে আশির দশকে মোট ৯০০টি ছবিতে অভিনয় করেন প্রেম। সেই ছবিগুলির মধ্যে মোট ৭২০টি ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
প্রেমের যখন ৫০ বছর বয়স তখন তিনি মুখ্যচরিত্রে অভিনয় ছেড়ে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। আশির দশক থেকেই মালয়ালম ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন প্রেম।
পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেও ৫০টি হিট ছবি নিজের কেরিয়ারের ঝুলিতে ভরেন প্রেম। রাজনীতির সঙ্গে কোনও রকম যোগসূত্র ছিল না প্রেমের। কিন্তু তাঁর কাছের বন্ধু রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বন্ধুর সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় প্রচারে যেতে দেখা যেত প্রেমকে।
ডায়াবিটিসে আক্রান্ত ছিলেন প্রেম। প্রচারের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে সঠিক সময়ে খাওয়াদাওয়া করতেন না প্রেম। এর ফলে আলসার বাসা বাঁধে অভিনেতার শরীরে। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে।
হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন প্রেমের সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুরাগীরা ভিড় জমাতেন। কানাঘুষো শোনা যায় যে প্রেমের সঙ্গে হাম রোগে আক্রান্ত এক অনুরাগী দেখা করতে যান। তার পর হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন অভিনেতা। ১৯৮৯ সালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
সকল ছবি সংগৃহীত।