Manipur Violence

শান্তির বার্তা নিয়ে রাহুল গেলেন মণিপুরে, কথা বলবেন নাগরিক সমাজ, ঘরছাড়াদের সঙ্গে

গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৩ ১০:৫২
Congress leader Rahul Gandhi leaves for Manipur, to meet victims of violence in relief camps in two days visit

মণিপুর রওনা হলেন রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।

দু’দিনের সফরে মণিপুর রওনা হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ দিল্লি থেকে বিমানে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে বাড়ি দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার গোষ্ঠীহিংসায় দীর্ণ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর।

কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার সময়ে পৌঁছে লামকা (চূড়াচন্দ্রপুর)-য় বেশ কয়েকটি শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার কথা রাহুলের। হিংসায় ঘরছাড়া হয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়া অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। পরে তিনি বিষ্ণুপুরের শরণার্থী শিবিরে যাবেন। রাতে থাকবেন মৈরাংয়ে। শুক্রবার রাজধানী ইম্ফলের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার কথা রাহুলের। যুযুধান মেইতেই জনগোষ্ঠী এবং কুকি এবং নাগা জনজাতির নাগরিক সমাজের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন তিনি। দিল্লি ফেরার আগে কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করতে পারেন তিনি।

Advertisement

এরই মধ্যে রাহুলের সফরের বিরোধিতা করে মণিপুর পেট্রিয়টিক পার্টি তাঁর উদ্দেশে খোলা চিঠি দিয়েছে। মেইতেই জনগোষ্ঠী প্রভাবিত বিজেপি-ঘনিষ্ঠ ওই সংগঠনের বক্তব্য, আদতে কংগ্রেসের আমলেই মণিপুরের এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এখন রাহুল ঘোলা জলে মাছ ধরতে আসছেন। তাদের দাবি, কংগ্রেস সরকারই ১৯৪৯ সালে স্বাধীন মণিপুরকে জোর করে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করেছিল। মণিপুরবাসী সেই একত্রকরণ মানতে পারেনি বলেই রাজ্যে সশস্ত্র সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাসের সূচনা হয়। ওই সংগঠনের দাবি, কংগ্রেসই বরাবর কুকিদের ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে ব্যবহার করেছে এবং পৃথক কুকিল্যান্ডের স্বপ্ন দেখিয়েছে। তার জেরেই আজ পাহাড় থেকে মেইতেইদের বহিষ্কার করে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলছে কুকিরা। তাদের আরও অভিযোগ, কুকি জঙ্গিদের দমন না করে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি করার আড়ালে কংগ্রেস সরকার আসলে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নাগা এবং মেইতেইদের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়েছিল।

প্রসঙ্গত, মণিপুরে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ধারাবাহিক হিংসায় নিহতের স‌ংখ্যা দেড়শো ছুঁতে চলছে। ঘরছাড়া প্রায় ৫০ হাজার মানুষ! গত শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক করলেও তার পরেও হিংসার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।

মণিপুরে যুযুধান মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন ইতিমধ্যেই বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকারের প্রতি প্রকাশ্যে অনাস্থা প্রকাশ করেছে। এমনকি কুকিরা পৃথক রাজ্যের দাবিও তুলেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই দাবিতে ইন্ধন জুগিয়েছেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির সহযোগী দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের প্রধান জোরামথাঙ্গা। প্রসঙ্গত, হিংসার কারণে মণিপুরের প্রায় ১২ হাজার জো-কুকি এখন মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন। মণিপুরের কুকি প্রভাবিত এলাকায় বৃহত্তর মিজোরামের দাবিতে দেওয়াল লিখন, পোস্টার পড়েছে। মণিপুরের ১০ জন কুকি বিধায়ক একজোট হয়ে কেন্দ্রের কাছে ‘পৃথক প্রশাসন’ দাবি করেছেন। তাঁদের মধ্যে সাত জন বিজেপি বিধায়কও রয়েছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement