গান্ধী মূর্তির কাছে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হলেন বিরোধী সাংসদরা। —নিজস্ব চিত্র।
আদানিকাণ্ডের জের। সংসদে গান্ধী মূর্তির কাছে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হলেন বিরোধী সাংসদেরা। সেখানে যোগ দিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, শান্তনু সেনরাও।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের ভিত্তিতে আদানি গোষ্ঠীর উপর ওঠা অভিযোগ নিয়ে সংসদে আলোচনা চাইছে বিরোধীরা। আর সেই দাবিতেই সোমবার কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিআরএস-এর মতো দলগুলির বিরোধী সাংসদরা সংসদের উভয় কক্ষে মুলতবি প্রস্তাব এনেছে। মুলতবি প্রস্তাব জমা দিয়ে বিরোধী দলের সাংসদেরা সোমবার সকালে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসেন। সংসদের বাজেট অধিবেশনের কৌশল স্থির করতে সোমবার কংগ্রেস সভাপতি এবং বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের চেম্বারে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের সদস্যরা বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে কংগ্রেস সাংসদদের পাশাপাশি, ডিএমকে, এনসিপি, বিআরএস, জেডিইউ, এসপি, সিপিএম, সিপিআই, জেএমএম, আরএলডি, আরএসপি, এএপি, আইইউএমএল, আরজেডি এবং উদ্ধব পন্থী শিবসেনা সাংসদরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে ওই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদেরা। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন টুইটারে লেখেন, ‘‘প্রতিবাদ প্রতিবাদের জায়গায় ঠিক আছে এবং চলবে। তবে এই নিয়ে সাংসদ অধিবেশন মুলতুবি করলে চলবে না। কোনও দল যদি এই নিয়ে অধিবেশন মুলতুবি করার চেষ্টা করে, তা হলে জানতে হবে যে, তারা আদপে বিজেপিকে সাহায্য করছে।’’ বৈঠকে না যোগ দিলেও গান্ধী মূর্তির পাদদেশে চলা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দেন লোকসভার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং রাজ্যসভার শান্তনু সেন।
সোমবার গান্ধী মূর্তির নীচে তৃণমূলের মহুয়া ছাড়াও কংগ্রেস নেতা খড়্গে, অধীর চৌধুরী, শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত এবং অন্য দলের সদস্যদের বিক্ষোভে শামিল হতে দেখা গিয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর উপর তদন্ত চালানোর দাবি প্রসঙ্গে অধীর সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘‘বিষয়টি কেবল কংগ্রেসের বা অন্য বিরোধীদের নয়, ভারতের সাধারণ মানুষের জন্যও উদ্বেগের বিষয়।’’ বিরোধী দলগুলিকে এই বিষয়ে এক হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন।
২৪ জানুয়ারি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে আমেরিকার শেয়ার সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ দাবি করেছে, এক দশক ধরে শেয়ারের দরে কারচুপি করে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। আর সেই কারণেই নাকি আদানিদের এত রমরমা। আদানিদের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগও আনে এই সংস্থা। হিন্ডেনবার্গের সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে আদানি গোষ্ঠী। আর এর পর থেকেই ধস নেমেছে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে। ১০ দিনে মোট ১১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৯ লক্ষ ৭৩ হাজার ৪০১ কোটি টাকা) খোয়াল গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গোষ্ঠী। সব মিলিয়ে গত এক সপ্তাহে আদানিদের ক্ষতির পরিমাণ আকাশছোঁয়া।
পাশাপাশি, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতে উত্তাল হয়েছে সাংসদের উভয় কক্ষ। বাজেট অধিবেশনের দিনগুলিতে আদানিদের উপর ওঠা অভিযোগ নিয়ে আলোচনার দাবিতে সরব বিরোধীরা।