অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দির। — ফাইল চিত্র।
ব্যাপক বিরোধিতার মুখে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দিরে তদন্তের নির্দেশ প্রত্যাহার করল কেন্দ্র। গত ৮ এবং ১৩ জানুয়ারির দুর্ঘটনার পরেই মন্দিরচত্বরে গিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সমাজমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে বাতিল হল সেই নির্দেশ।
প্রাথমিক ভাবে, রবি ও সোমবার অতিরিক্ত সচিব সঞ্জীবকুমার জিন্দলকে তিরুপতি মন্দিরে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সঞ্জীবের নেতৃত্বে মন্দির পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রের উচ্চপর্যায়ের আধিকারিকদের। কিন্তু মন্দিরের ব্যাপারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনা শুরু হয়ে যায় নানা মহলে। শেষমেশ ভক্তদের বিরোধিতার মুখে পিছু হটতে হল কেন্দ্রকে। তবে তদন্তের বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে এখনও পর্যন্ত নতুন করে কোনও নির্দেশ আসেনি।
গত ৮ জানুয়ারি তিরুপতি মন্দিরে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত্যু হয় ছ’জন ভক্তের। জখম হন আরও অনেকে। ৮ তারিখ সকাল থেকেই বৈকুণ্ঠ একাদশী এবং বৈকুণ্ঠদ্বার দর্শনের টিকিট সংগ্রহের জন্য মন্দির চত্বরে দীর্ঘ লাইন পড়েছিল ভক্তদের। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, সন্ধ্যার সময় ‘বৈকুণ্ঠদ্বার দর্শন’ টিকিটকেন্দ্রের সামনে লাইনে ছিলেন চার হাজারেরও বেশি মানুষ। সন্ধ্যার সময় বৈরাগী পট্টিতা পার্কে টোকেন বিলির ঘোষণা হতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। বিশৃঙ্খলার মাঝে মাটিতে পড়ে যান কয়েক জন। তার জেরেই দুর্ঘটনা। যদিও চন্দ্রবাবু নায়ড়ুর সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল, বৈকুণ্ঠ একাদশী উপলক্ষে ‘পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা’ ছিল। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অভিযোগ ওঠে, বিপুল সংখ্যক ভক্তের জন্য মাত্র একটি কাউন্টার খোলা রাখা হয়েছিল। পুলিশও ভিড় নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি বলে অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ।
এই ঘটনার দিন কয়েক পরেই ১৩ জানুয়ারি মন্দিরচত্বরের সামনে তিরুমালার লাড্ডু বিতরণকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রসাদ সংগ্রহের মাঝেই শর্ট সার্কিটের জেরে আগুন ধরে যায় কাউন্টারে। পর পর দু’টি দুর্ঘটনায় নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে এই তিরুপতির মন্দিরেই প্রসাদী লাড্ডুতে পশুচর্বি মেশানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগ ঘিরেও দেশজোড়া বিতর্কের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল।