প্লান্টে চলবে নিয়মিত মহড়া
COVID19

দেশে আবার করোনা হানা দিলে যেন অক্সিজেনের ঘাটতি না হয়, রাজ্যগুলিকে সতর্কবার্তা কেন্দ্রের

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুর দিকে (২০২১-এর মাঝামাঝি) দেশে অক্সিজেনের অভাব অনুভূত হয়েছিল। এ বার তাই আগেভাগেই প্রস্তুত থাকতে চায় কেন্দ্র।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:২৩
অক্সিজেন কন্ট্রোল রুম তৈরি করে অক্সিজেন সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার উপরে নজরদারিরও জন্যও বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।

অক্সিজেন কন্ট্রোল রুম তৈরি করে অক্সিজেন সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার উপরে নজরদারিরও জন্যও বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। প্রতীকী ছবি।

কোনও ঝুঁকি নয়, চিনে করোনার বাড়বাড়ন্তের পরেই তৎপর কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে অক্সিজেন পরিকাঠামো ও ভেন্টিলেটরের পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত রাখার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের জোগান নিশ্চিতের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি চিন, হংকং, তাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে যে বিমানযাত্রীরা আসছেন, তাঁদের করোনার আরটি-পিসিআর পরীক্ষাও আবশ্যিক বলে আজ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুর দিকে (২০২১-এর মাঝামাঝি) দেশে অক্সিজেনের অভাব অনুভূত হয়েছিল। এ বার তাই আগেভাগেই প্রস্তুত থাকতে চায় কেন্দ্র। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব মনোহর আগনানি সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উদ্দেশে চিঠিতে জানিয়েছেন, দেশে এখনও করোনা সংক্রমণ বেশ কম। তবে ভবিষ্যতে কোনও সঙ্কটজনিত পরিস্থিতি তৈরি হলে যাতে তার মোকাবিলা করা যায়, তাই চিকিৎসা পরিকাঠামোর উপরে আগাম গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। অক্সিজেন তৈরির পিএসএ প্লান্টগুলিকে সক্রিয় রাখার পাশাপাশি প্লান্টগুলিতে নিয়মিত ‘মক ড্রিল’ চালানোর বার্তা দিয়েছেন। নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে তরল অক্সিজেনের জোগান রাখা এবং সেই অক্সিজেন ‘রিফিলিং’-এর ক্ষেত্রে যাতে কোনও বিঘ্ন না-ঘটে। পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের উপরেও। রাখতে হবে ভেন্টিলেটর, বাইপ্যাপের মতো জীবনদায়ী সরঞ্জামের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। ফের অক্সিজেন কন্ট্রোল রুম তৈরি করে অক্সিজেন সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার উপরে নজরদারিরও জন্যও বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।

Advertisement

আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, দেশের সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আগামী ২৭ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার ‘মক ড্রিল’ চালানো হবে। কোভিড মোকাবিলার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা, চিকিৎসক, নার্স-সহ সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা, অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা, করোনা পরীক্ষার পরিস্থিতি, মেডিক্যাল অক্সিজেন এবং টেলিমেডিসিন পরিষেবার বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে। সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের নেতৃত্বে এবং স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারদের উপস্থিতিতে এই ‘মক ড্রিল’ চালানো হবে।

আজ মাণ্ডবিয়া চিন-সহ বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা আবশ্যিক করার কথা জানানোর পাশাপাশি ‘এয়ার সুবিধা পোর্টাল’-এর মাধ্যমে চিন, জাপান, সিঙ্গাপুর, তাইল্যান্ড থেকে আসা যাত্রীদের উপরে নজরদারি চালানো হবে বলেও জানান। কেউ করোনা-আক্রান্ত হলে কিংবা কারও উপসর্গ দেখা গেলে বিচ্ছিন্নবাসে রাখার বার্তাও দেওয়া হয়েছে।

এ দিকে আইসিএমআর-এর প্রাক্তন বিজ্ঞানী সমীরণ পাণ্ডা জানিয়েছেন, ভারতের অবস্থা কখনওই চিনের মতো হবে না। ওমিক্রনের বিএফ.৭ উপপ্রজাতির সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি হলেও তা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। ভারতীয়দের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই এ ক্ষেত্রে ঢাল হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন তিনি। একই মত এমসের প্রাক্তন ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়ারও। টাটা ইনস্টিটিউট ফর জেনেটিকস অ্যান্ড সোসাইটির ডিরেক্টর রাকেশ মিশ্র অবিলম্বে টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। জমায়েত এড়াতে ও মাস্ক পরতেও বলছেন।

করোনা নিয়ে উদ্বেগজনিত পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে জানিয়েছেন, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় ভয় পেয়েই বিজেপি করোনার অজুহাত খাড়া করতে চাইছে। তাঁর কথায়, “দেশে কোভিড নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই মাস্ক পরছেন না। এ সমস্তই করা হচ্ছে মানুষকে ভয় দেখিয়ে পদযাত্রায় বিঘ্ন ঘটাতে।”

খড়্গে সংক্রমণের আশঙ্কা উড়িয়ে দিলেও আজ মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছে পঞ্জাব সরকার। কড়া কোভিডবিধি পালনের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীও সুরক্ষাবিধি মেনে চলতে আবেদন জানান। সে রাজ্যে দ্রুত বুস্টার ডোজ় দেওয়ার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ‘র‌্যান্ডম’ কোভিড পরীক্ষা শুরু হয়েছে দিল্লি বিমানবন্দরে।

আরও পড়ুন
Advertisement